দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় লাভের পরে মন্ত্রীসভার দিনে সবার নজর। আগামী বৃহস্পতিবার মন্ত্রী সভার শপথ হবে। সেখানে নতুন মন্ত্রী সভা গঠিত হবে। কে হচ্ছেন মন্ত্রী সভার নতুন মন্ত্রীত্ব। এ নিয়ে আলোচনা অন্ত নেই। ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জের কয়েকজন সংসদ সদস্য আলোচনায় রয়েছে। এই জেলার কয়েকজন প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা ও সংসদ সদস্যকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে।
সেই তালিকার শীর্ষে রয়েছে- বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। তিনি নারায়ণগঞ্জ-১ রূপগঞ্জ আসন থেকে বিজয়ী হয়েছেন। তার পরেই রয়েছে নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান ও নারায়ণগঞ্জ- ২ (আড়াইহাজার) আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু।
টানা চার বার নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন গোলাম দস্তগীর গাজী। এর মধ্যে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হয়েছেন তিনি। ফলে মন্ত্রী সভায় ইতোমধ্যে তিনি নাম লিখিয়েছেন। এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করে গত মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। ফলে এবারও মন্ত্রী সভায় ঠাঁই পেতে যাচ্ছেন বলে বেশ গুঞ্জন রয়েছেন।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনের এই বীর মুক্তিযোদ্ধা দেশের ব্যবসা বাণিজ্যে যেমন সফলতার পরিচয় দিয়েছেন তেমনি রাজনীতিতেও দেখিয়েছেন কারিশমা। দেশের অন্যতম সফল ব্যবসায়ী গাজী গ্রুপের চেয়ারম্যান পদের পাশাপাশি দক্ষতার সাথে সামলেছেন রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতি। সততা ও স্বচ্ছ ইমেজের রাজনীতি চর্চার কল্যাণে প্রধানমন্ত্রীর গুডবুকে থাকায় গত সরকারে দায়িত্ব পেয়েছিলেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের। মন্ত্রিত্বের ৫ বছরে নিজের গায়ে কাঁদা লাগতে দেননি তিনি। ফলে এবারও তিনি মন্ত্রীসভার ঠাঁই পেতে যাচ্ছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী ও খেতাব প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় শিল্প ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী করতে পারেন বলে জানা গেছে।
চার বাবের মতো নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা এ কে এম শামীম ওসমান। তিনি এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে ১৯৯৬ সালে, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে সংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। বিগত সময়ে তাকে মন্ত্রীসভায় রাখতে চেয়েছিলে বলে দাবি করেছেন এই সংসদ সদস্য। তবে তিনি মন্ত্রী সভায় থাকতে রাজি হননি বলে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে প্রায় সময় বক্তব্য দিয়ে আসছেন। তবে এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেষ জনসভাটি নারায়য়ণগঞ্জে হয়েছে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে মেট্রোরেল নিয়ে নানা দাবি করতে দেখা যায়। সেই দাবির প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, নারায়ণগঞ্জ দিয়ে তিনটি মেট্রোরেল চলাচলের ঘোষণাও দিয়েছেন। ফলে তিনি প্রধানমন্ত্রীর গুডবুকে রয়েছেন বলে নেতাকর্মীরা দাবি করছেন। ফলে এবার মন্ত্রী সভায় এই সংসদ সদস্য ঠাঁই পাবেন বলে গুঞ্জন উঠেছে।
টানা দিন মেয়াদে নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার) আসন থেকে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে আসছেন নজরুল ইসলাম বাবু। তিনি এক সময়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন। ফলে কেন্দ্রের তার বেশ দাপট রয়েছে। এছাড়া একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় প্রধানমন্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে তিনি আহত হয়েছিলেন। ফলে তিনিও প্রধানমন্ত্রীর গুডবুকে রয়েছেন। যেকারণে তিনিও আলোচনায় রয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নারায়ণগঞ্জ জেলাকে আরও উন্নত করতে আরও মন্ত্রী প্রয়োজন। তাছাড়া রাজধানীর লঘোয়া এই জেলায় আরও ব্যাপক উন্নয়ন দরকার। সেকারণে জনগণ ও নেতাকর্মীদের দৃষ্টি এখন মন্ত্রী সভার দিকে।