বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি নাকি দৃষ্টতা। অথচ খালেদা জিয়াকে জেলে রাখা যে কতটা অন্যায়, কতটা অবিচার; সময় আসলে বাপধন টের পাইবা।’
সোমবার (১ জুলাই) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি।
তিনি আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তা মিথ্যা ও ভুয়া। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একটা মামলাও সঠিক না। এসব মামলা প্রতিবেশীদের খুশি করার জন্য। খালেদা জিয়ার অপরাধ, তিনি দেশবিরোধী চুক্তি করতে নারাজ, তিনি দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিতে রাজি নন।’
গয়েশ্বর বলেন, ‘স্বাধীন দেশে আওয়ামী লীগ সরকার মানুষকে মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে। প্রতিবেশী দেশের সাথে স্বার্থবিরোধী কোন চুক্তি নিয়ে কিছু বললেই আমাদের বলে আমরা নাকি ভারত-বিদ্বেষী। একটা চক্রান্ত চলছে। আওয়ামী লীগকে ভারতের সেবাদাস বানানোর চক্রান্ত চলছে। গত ষোলো-সতেরো বছরে হাসিনা যতগুলো চুক্তি করছেন, একটা চুক্তিও কি পার্লামেন্টে অবহিত করছেন? বাংলাদেশের চুক্তি করবেন বাংলাদেশের জনগণকে অজ্ঞাত রেখে? এটা কখনও হবার নয়।’
আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘রিজার্ভ নাই, টাকা নাই, এইটা সেইটা বলে বিদেশে ভিক্ষা করে। আর জনগণের উপর ভ্যাট-ট্যাক্স বসায়। আপনার (শেখ হাসিনা) পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনরা ষোলো-সতেরো বছরে যা কামাইছেন বাংলাদেশ থেইকা তা বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেন, একটা টাকাও ট্যাক্স বাড়ানোর দরকার হবে না।’
‘বাজেট আর প্রকল্প মানেই চুরি’ মন্তব্য করে গয়েশ্বর বলেন, ‘জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, বেকারত্ব বাড়ছে, নতুন কর্মসংস্থান নাই। আমদানি-রপ্তানি নিম্নগতি কিন্তু বিশাল একটা বাজেট করছেন। উন্নয়ন তো খয়রাত না, উন্নয়ন জনগণের অধিকার, জনগণের টাকায় হয়। সেই উন্নয়নের নামে তারা টাকা লুটপাট করে খায়। স্বাস্থ্যখাতের অবস্থা তো করোনার সময়ের চেয়েও খারাপ। যেদিকে তাকাবেন সব খাতেই চুরি আর ডাকাতি।’
ভারতকে করিডোর দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের উপর দিয়ে ভারতের রেললাইন গেলে আমাদের কী লাভ হবে তাতো জনগণকে জানাতে হবে। এখন করিডোর শুরু হলে পরে নিরাপত্তার কথা বলে ভারতীয় আর্মি বাংলাদেশে ঢুকবে। আমাদের দেশ স্বাধীন করতে লক্ষ মানুষ প্রাণ দিয়েছে। আমরা পাকিস্তানের অত্যাচার ও অর্থনৈতিক বিষম্য মানতে পারলাম না কিন্তু এখন আমরা দিল্লীর গোলামি করি। এই আওয়ামী লীগ সরকারকে বিদায় দিতে না পারলে বাংলাদেশ নামে দেশটির নাম মানচিত্রে থাকবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বেনজির, আজিজ, মতি, সম্রাটদের মতো কত তালিকা যে আছে এইদেশে। দুর্নীতি ছাড়া যাদের কোনো নীতি নাই, তারা বলেন, দুর্নীতিতে কোনো আপোস নাই, আহা! সময় আসলে সবকিছুর জবাব দিতে হবে। হুমকি বাদ দেন, ভদ্র হওয়ার চেষ্টা করেন।’
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খানের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহাম্মেদ টিটো, নজরুল ইসলাম আজাদ, জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব আবু আল ইউসুফ খান।