জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ডামা ঢোল বাঁজতে শুরু করেছে। তবে এবারের নির্বাচনে দলীয় প্রতিক না থাকায় নির্বাচনে নানা সমীকরণ তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক অধিকাংশ দল থেকে একাধিক প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় বন্দর উপজেলায় একাধিক প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। তবে বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ রশিদের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজিম উদ্দিন প্রধান ও সহ সভাপতি এম এ সালামের নাম উঠে এসেছে। এতে করে আওয়ামী লীগের মধ্যে তুমুল লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জানা গেছে, বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অনেকে প্রার্থী হওয়ার নানা প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিলেন। তবে শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের এক সমঝোতায় উপজেলা আ্’লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা এম এ রশিদকে বিনাভোটে চেয়ারম্যান মনোনীত করা হয়। ফলে ওই সময়ে অনেক হেভিওয়েট প্রার্থী নির্বাচনে লড়াইটুকু করতে পারেননি।
তবে এবার দলীয় প্রতিক না থাকায় ক্ষমতাশীন দল আ.লীগ, জাতীয়পার্টি ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা যার যার অবস্থান থেকে মাঠে নেমে পড়েছেন। অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার প্রচারণা করে যাচ্ছেন। আবার অনেকে ব্যানার ফেষ্টুনে প্রতিটি ইউনিয়নে প্রচার প্রচারণা করে সয়লাভ করছেন। জনপ্রিয়তা জানান দিতে কেউ কেউ প্রতিটি ইউনিয়নে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছেন।
জানা গেছে, বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা এম এ রশিদ ছাড়াও আলোচনায় রয়েছে বন্দর উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও শ্রমিকলীগ নেতা কাজিম উদ্দিন প্রধান, উপজেলা আ.লীগের সহসভাপতি ও মদনপুর ইউনিয়নের ৩বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান গাজী এম এ সালাম, মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান ও বিএনপির বহিস্কৃত নেতা এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল।
দলীয় নেতাকর্মী সূত্র বলছে, চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে, তাদের মধ্যে মিনজন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত রয়েছেন এবং পদধারী নেতা। বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ রশিদ, বন্দর উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও শ্রমিকলীগ নেতা কাজিম উদ্দিন প্রধান, উপজেলা আ.লীগের সহসভাপতি গাজী এম এ সালাম এর মধ্যে তুমুল লড়াই হবে। কারণ ক্ষমতাসীন দলের এই তিন জন প্রার্থী বেশ জনপ্রিয়। এছাড়া মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন ও কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান হলেন জাতীয় পার্টির নেতা। আর বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুলের বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে। ফলে জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে কেউ কারও চেয়ে কোন অংশে কম নয়। ফলে নির্বাচনে ভোটের লড়াই তুমুল আকার ধারণ করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে মহানগর বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি তথা বিএনপির বহিস্কৃত নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল তার ভেরীফাই ফেসবুক পেইজে উপজেলা নির্বাচনে কর্মীদেও প্রস্তুত থাকার ইঙ্গিত দিয়েছেন। এতে তার কর্মী সমর্থকরা ফেসবুকে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে তার ফেষ্টুন-পোস্টার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছে। তবে এদের মধ্যে প্রচার প্রচারনায় আলোচনায় রয়েছেন উপজেলা আ.লীগের সহসভাপতি ও মদনপুর ইউনিয়নের ৩বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান গাজী এমএ সালাম ও উপজেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক কাজিম উদ্দিন প্রধান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাদের কর্মী সমর্থকরাও একই ধরনের পোস্টার ও ফেস্টুন ছড়িয়ে প্রচারণা চালাচ্ছে।
নির্দিষ্ট সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম সেলিম ওসমান ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানের গ্রিন সিগনালের অপেক্ষায় রয়েছে এসব প্রার্থীরা। ওসমান ভ্রাতৃদ্বয়োর সাথে এসব প্রার্থীদের যোগাযোগ রয়েছে। ফলে তাদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে তারা। গ্রিন সিগনাল পেলেই ভোটের লড়াইয়ে অংশগ্রহণ করবেন তারা।