নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, ‘আমি আপনাদের কাছে ভোট চাইতে আসিনি। ভোট চাইবোও না। কেন ভোট চাইবো? আপনাদের বিবেক আছে। সেই বিবেক যাকে বলবে আপনারা তাকেই ভোট দিবেন। আমি এসেছি আপনাদের জাগাতে। কারন এই দেশ যেমন আমার তেমন আপনারও। আজকে যারা ট্রেনে আগুন দিয়ে মা ও সন্তানকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে অঙ্গার করে দিয়েছে তারাই এরআগে ৫০০ মানুষকে পেট্রোল বোমা দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। এরা এবং এদের দোসররাই ৭১ সালে ৩০ লক্ষ মানুষকে হত্যা করেছে। ২ লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রম কেড়ে নিয়েছে। এদের হাতে খুন হয়েছে আমাদের ৫৪ নেতা-কর্মী। দায় কি শুধুই আমাদের? এদেশের মালিক আপনারা জনগন। তাই আপনাদের জেগে উঠতে হবে। আগুন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে হবে ভোটকেন্দ্রে এসে ব্যালটের মাধ্যমে।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) ফতুল্লার কাশিপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড থেকে আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণা শুরুকালে উঠান বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
উঠান বৈঠক শেষে হাজী উজির আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে শামীম ওসমান বলেন, হরতাল ও অবরোধ নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘনের মধ্যে পড়ে। নারায়ণগঞ্জে কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনা বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব নারায়ণগঞ্জ নির্বাচন কমিশনের। এগুলো যথাযথ ব্যবস্থা নিতে না পারলে সুষ্ঠু নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। এতে করে ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হতে পারে। তাই আমি নারায়ণগঞ্জে হরতাল অবরোধ ও নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন যেন না হয়, সে বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ নির্বাচন কমিশন তথা প্রশাসনকে যুগোপযোগী ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ দিচ্ছি।
উঠান বৈঠক শেষে পাড়া মহল্লার অলিগলিতে ভোটারদের সঙ্গে কুল বিনিময় করেন তিনি।
শামীম ওসমান বলেন, আমাকে মন্ত্রী হইতে বলা হইসে, আমি হইনি। আমি মানুষকে ভালোবাসি, আমার বাবা-মায়ের কাছ থেকে আমি এটাই শিখেছি। এই ফতুল্লা অঞ্চলে ১২-১৫ হাজার কোটি টাকার কাজ আমরা করে ফেলেছি। আমরা প্রাইমারী স্কুল করেছি ১২৫কোটি টাকার উপরে, হাই স্কুল করেছি ২০০শ কোটি টাকার উপরে। পাগলের মতো কাজ করেছি, কারণ আল্লাহকে খুশি করাতে চাই।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে শামীম ওসমান বলেন, মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করার নাম কি রাজনীতি? কেন রে ভাই। আল্লাহর কাছে কি জবাব দিবেন না। আমাদের ৫৪জন মানুষকে এই পর্যন্ত নিজের হাত দিয়ে দাফন করতে হয়েছে। কই, আমরা তো প্রতিশোধ নেই না। আমার ভাই সেলিম ওসমান, তখন সে রাজনীতি করতো না। তার প্যাক্টরির ভেতর ঢুকে ৩০০শ গরুরর দুধের বান কেটে দেওয়া হলো। ভাইকে গ্রেফতার করা হলো। ১৫ মিনিটের মধ্যে যদি মনে করি ওদের নাই করে দিবো, পুলিশ-প্রশাসন ওদের পক্ষে থাকবে; তার পরেও কিচ্ছু করতে পারবে না। কিন্তু আমি এটা করবো না।
তিনি বলেন, আমরা ৮৫ ভাগ কাজ শেষে করেছি, আমি বাকি কাজ গুলো শেষ করতে চাই। আমি এখন চাচ্ছি,নারায়ণগঞ্জের মানুষের যাতে আর ঢাকায় যেতে না হয়। আমাদের নারায়ণগঞ্জে মেট্রোরেল হবে। আমরা একটা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চাই।
তিনি আরও বলেন, আপনি কি মনে করেন, আওয়ামী লীগের সব ভালো লোক? না। এদলেও খারাপ লোক আছে। অন্য দলে সব খারাপ লোক? নো। সেখানেও ভালো লোক আছে। আমার জীবনের শেষ বয়স চলছে। প্রতিদিন আমার কেন জানি মনে হয়, আমি আর বাচঁবো না।
এসময় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল, মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত আলী, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন সাজনু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাফায়েত আলম সানি, ছাত্রলীগ নেতা রাফেল প্রধাণ, আহমেদ কাউছার প্রমুখ।