‘নৌকায় লাঙ্গল চড়ে বসছে’ উল্লেখ করে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নৌকা মার্কা আমাদের মার্কা। নৌকা হচ্ছে নূহ নবীর নৌকা মহাপ্লাবনে মানব জাতিকে রক্ষা করেছিল। এই নৌকায় ভোট দিয়ে মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে। এই নৌকা আজকে উন্নয়ন দিয়েছে। এই নৌকা আগামীকে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। তাই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাদের প্রার্থীদের আপনারা জয়যুক্ত করবেন। আপনাদের কাছে সেই আহবান জানাই। অবশ্য নৌকায় লাঙ্গল চড়ে বসছে।
বৃহস্পতিবার ৪ (জানুয়ারি) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের ইসদাইর এলাকায় এ কে এম শামসুজ্জোহা স্টেডিয়ামে নির্বাচনী জনসভায় অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
জনসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, নারায়ণগঞ্জ -১ আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, নারায়ণগঞ্জ -২ আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু, নারায়ণগঞ্জ -৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী সহ প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জ জেলার ৫টি আসনের মধ্যে একটি আসনে লাঙ্গল প্রতীককে ছাড় দেওয়া হয়েছে। এতে করে নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর ও বন্দর) আসনটিতে লাঙ্গল মার্কার প্রতীকের পক্ষে আওয়ামী লীগ সহ শরীক দলের নেতাকর্মীরা কাজ করছেন।
জানাগেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন পক্রিয়ার আগে নারায়ণগঞ্জ জেলার ৫টি আসনে নৌকার প্রার্থী দেয়ার দাবি তোলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবন্দরা। তবে জেলার ৪টি আসনে নৌকার প্রার্থী দিলেও, নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর ও বন্দর) আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত লাঙ্গল মার্কার প্রার্থী এ কে এম সেলিম ওসমানকে ছাড় দেওয়া হয়। ফলে সেই বিষয়কে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী এরুপ বক্তব্য দিয়েছেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এর আগে, ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের মধ্যে দুটি আসনে জাতীয় পার্টিকে ছাড় দেওয়া হয়। নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) ও নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর ও বন্দর) আসনে যথাক্রমে লিয়াকত হোসেন খোকা ও এ কে এম সেলিম ওসমানকে ছাড় দেওয়া হয়। ফলে ওই দুই আসনে নৌকার প্রার্থীরা মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে উল্টো জাতীয় পার্টির প্রতীক লাঙ্গলের পক্ষে কাজ করেছে। একইভাবে ২০০৮ সালে এই দুটি আসনে লাঙ্গলকে ছাড় দেওয়া হয়। ফলে এই জেলায় কার্যত অর্থে, জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকটি নৌকায় চড়ে বসেছে বলা চলে। এছাড়া ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি সহ আরও বেশ কয়েকটি রাজনীতিক দল নিয়ে মহাজোট গঠন করা হয়। ওই নির্বাচনে সারাদেশে আওয়ামী লীগের শরীক দল হিসেবে অনেকগুলো আসনে জাতীয় পার্টিকে ছাড় দেওয়া হয়। একইভাবে ২০১৮ সালের নির্বাচনেও ছাড় দেওয়া হয়। সেই ধারাবাহিকতায় এবার ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীককে ছাড় দেওয়া হয়েছে।