বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৮ তম আসরের উদ্বোধন হয়েছে। রবিবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে রূপগঞ্জের পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে বাণিজ্যমেলা উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে এবারের মেলায় পরিধি গত বছরের তুলনায় বেড়েছে। সেই সাথে বেড়েছে স্টলের সংখ্যা। ফলে এবারের আসরে বিক্রির পরিমাণ শত কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা করেছেন আয়োজকরা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মেলায় দর্শনার্থীরা বেশ আগ্রহ নিয়ে দেখতে এসেছেন। এর মধ্যে ক্রেতার সংখ্যা একেবারে কম বলা চলে। আর স্টল মালিকদের অনেকে এখনো স্টল নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি। কেউ কেউ সাজসজ্জার কাজ করছেন এখনো। তবে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে মেলা বেশ জমে উঠবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মেলায় ঘুরতে এসেছেন লতা আক্তার। তিনি বলেন, বাণিজ্য মেলার প্রথম দিনে দেখতে এসেছি। ঘুরে ঘুরে স্টলের বিভিন্ন পণ্য দেখছি। এখনো কিছু কিনিনি। পছন্দ হলে কিনবো। এখনো সেভাবে মেলা জমে উঠেনি। মেলা জমে উঠলে আবার আসবো।
আরো পড়ুন: পর্দা উঠলো আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার
মেলায় স্টল তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করেছেন দেশি ও বিদেশি স্টল মালিকরা। আবার অনেক স্টল তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। মেলা প্রাঙ্গনে প্রথমবারের মত স্টল নিয়েছেন জারিন ফ্যাশনের ইনচার্জ রনি আহমেদ। তিনি বলেন, এবার প্রথম বারের মত স্টল নিয়েছি। স্টলের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে। প্রায় ৮৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।
এছাড়া আরও অনেক স্টলের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। আবার অনেক স্টল নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করলেও সাজসজ্জার কাজ এখনো বাকি রয়েছে।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, তুরস্ক, ভারত, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, হংকং এবং ইরানের কোম্পানিগুলো এ বছর তাদের পণ্য প্রদর্শন করবে। মেলায় বিদেশি কোম্পানির ১৬ থেকে ১৮টি প্যাভিলিয়নসহ ৩৫১টি স্টল রয়েছে। বিগত বছরের মেলার আসরে স্টলের সংখ্যা ছিল ৩৩১ টি, যে হিসেবে এবার স্টলের সংখ্যা বেড়েছে। মেলায় দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন পণ্য বিক্রির আসর বসেছে। দেশের বস্ত্র, মেশিনারিজ, কার্পেট, কসমেটিকস অ্যান্ড বিউটি এইডস, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস, ফার্নিচার, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহসামগ্রী, চামড়া/আর্টিফিসিয়াল চামড়া ও জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য, স্পোর্টস গুডস, স্যানিটারি ওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক, মেলামাইন পলিমার, হারবাল ও টয়লেট্রিজ, ইমিটেশন জুয়েলারি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ফাস্টফুড, হস্তশিল্পজাত পণ্য, হোম ডেকর ইত্যাদি পণ্য মেলায় প্রদর্শিত হবে। পণ্য প্রদর্শনের পাশাপাশি দেশীয় পণ্য রপ্তানির বড় বাজার খোঁজার লক্ষ্য রয়েছে। মেলায় প্রবেশ মূল্য সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য ৫০ টাকা এবং ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য ২৫ টাকা। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টায় খোলা হবে এবং কর্মদিবসে রাত ৯টায় বন্ধ হবে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে দর্শনার্থীরা রাত ১০টা পর্যন্ত মেলায় থাকতে পারবেন। ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেলা চলবে।
আরো পড়ুন: ‘ক্ষমতা আমার কাছে ভোগের নয়: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সচিব বিবেক সরকার বলেন, সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। বিগত বছরের তুলনায় এবার স্টলের সংখ্যা বেশি। ফলে এবার বিক্রির পরিমাণ শত কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছি।
প্রসঙ্গত, গত বছর মাসব্যাপী এ মেলায় ৩৩১টি স্টল থেকে ১০০ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করেছেন অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। এ ছাড়া মেলায় ৩০০ কোটি টাকার তাৎক্ষণিক রপ্তানি আদেশ পাওয়া যায়। মেলায় ৩০ থেকে ৩৫ লাখ দর্শনার্থী উপস্থিত হয়েছিলেন বলে জানায় আয়োজনকরা।