আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে জোরে সোরে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ- ৪ আসনের প্রার্থী ও সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান। তবে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে প্রচারণা চালাচ্ছেন আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী এই সংসদ সদস্য। এবার তিনি ভোটারদের তিনটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বুধবার বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন শামীম ওসমান। এ সময় তিনি কয়েকটি উঠান বৈঠকে বক্তব্য দেন।
উঠান বৈঠকে শামীম ওসমান ভোটারদের তিনটি প্রতিশ্রুতি দেন, যা তিনি নির্বাচনের পরে এই এলাকার মানুষদের জন্য করবেন। অবকাঠামোগত উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে পারলে উন্নত রাষ্ট্র গড়ে উঠবে। তেমনই কিছু সামাজিক সমস্যা দূরীকরণে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা ভোটারদের কাছে উপস্থাপন করেন শামীম ওসমান।
‘প্রত্যাশা’ নামক সামাজিক একটি সংগঠন ও তার কর্মপরিকল্পনার কথা বলেন তিনি। শামীম ওসমান বলেন, ‘সংগঠনটির মাধ্যমে আমি প্রথমে তিনটি বিষয় নিয়ে কাজ করব। সেগুলো হলো মাদক, গরীব মেধাবীদের পড়ালেখায় সহযোগিতা এবং অসহায় রোগীদের চিকিৎসাসেবা প্রদান। নির্বাচনের পরে আমি আমার নেত্রীর সঙ্গে কথা বলব। স্পেশাল টিম আনব নারায়ণগঞ্জে। প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কমপক্ষে এক হাজার লোকের পঞ্চায়েত হবে। আমার লক্ষ্য হচ্ছে প্রত্যাশা নামে একটি সামাজিক সংগঠন করা। এই সংগঠনটিতে যারা যুক্ত থাকবে তাদের কোনো দল থাকবে না। সমাজের ভালো মানুষদেরকে নিয়ে সংগঠনটি হবে। আমি একমাস খাটলে আশি হাজার লোক হবে সংগঠনটির জন্য।’
শামীম ওসমান বলেন, ‘এই আশি হাজার মানুষ যদি চায় নারায়ণগঞ্জে কেউ মাদক বিক্রি করতে পারবে না, তাহলে কারও ক্ষমতা নেই সেটা করার। মাদক বিক্রি যারা করে তারা ইবলিশ-শয়তান। এরা বিভিন্ন বেশ ধারণ করে আমার আশেপাশেই আছে। হতে পারে সে পুলিশ, সাংবাদিক, শিক্ষক অথবা রাজনৈতিক ব্যক্তি। তবে যেই হোক না কেনো। কাউকে এবার আর ছাড় দিব না। আপনাদের সকলকে এ বিষয়ে জেগে উঠতে হবে। আমি ভোট চাইতে আসি নাই। আমি আপনাদের জাগাতে এসেছি। আপনাদের জাগতে হবে। আমি এমন এক নারায়ণগঞ্জ চাই যেখানে আমার মা বোনরা নিরাপদে থাকবে। যদি কোনো মা অথবা বোন চায় রাতে একা হাঁটতে বের হবে সে জন্য তার যাতে কোনো দুশ্চিন্তা করতে না হয়। নির্বিঘ্নে যাতে নারীরা চলাচল করতে পারে সেই বিষয়টি নিশ্চিত করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার দ্বিতীয় কাজটি হবে গরীব মেধাবী ছাত্রদের নিয়ে। যারা মেধাবী কিন্তু টাকার অভাবে পড়ালেখা করতে পারছে না তাদের এই সংগঠনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে। একসময় আমিও নয়শত টাকার জন্য ফর্মফিলআপ করতে পারি নাই। আমার শিক্ষক টাকা দিয়ে তখন ফর্ম ফিলাম করিয়েছিলেন। তাই আমি বুঝি সেই কষ্টটা।’
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘টাকার অভাবে যারা চিকিৎসা করাতে পারছে না তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। এর পরে ধাপে ধাপে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম সংগঠনটিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’
জনসভায় উপস্থিত যুবকদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘তোমরা যারা এখন শামীম ভাই শামীম ভাই, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ স্লোগান দিতেছ, এই স্লোগান দিয়ে লাভ নাই। যদি মা বাবা বেঁচে থাকে তাহলে তাদের সেবা কর। এলাকার জন্য ভালো কিছু কর। দেশের জন্য ভালো কিছু কর।’