হকার ইসুতে আবারও উত্তপ্ত হচ্ছে নারায়ণণগঞ্জ।
আগামী মঙ্গলবার থেকে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলার হুশিয়ারী দিয়েছে হকার নেতারা। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু সড়ক দখল মুক্ত করতে সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান বলেছেন,‘সোজা আঙ্গুলে ঘি না উঠলে আঙুল বাঁকা করবো।’
নারায়ণগঞ্জে গত কয়েক দিনে মতো বৃহস্পতিবার এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সড়ক দখল মুক্ত করণে প্রশাসনকেও মানছে না হকাররা। পুলিশের বিরুদ্ধে ডাকাতি মামলার হুমকি দিচ্ছেন তারা।
নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন সমস্যা গুলোর মধ্যে অন্যতম হকারদের দখলে সড়ক ও ফুটপাত। এতে চালাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হয় নগরবাসীকে। সমস্যার সমাধানে ১/১১ এর সময় নগরীতে একটি হকার মার্টেক করে দেওয়া হয়েছিল। সে সব দোকান বিক্রি করে হকাররা আবারও রাস্তায় ব্যবসা পরিচালনা শুরু করে। ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি সড়ক থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা করা হলে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর উপর হামলা করে হকাররা। এ ঘটনায় তখন উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
চলতি বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জের সমস্যা সমাধনে গোল টেবিল বৈঠকের আয়োজন করে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাব। সেখানে যানজট, হকার সদস্যা সহ নানা বিষয় উঠে আসে। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান সমস্যা গুলোর সামাধানের সিদ্ধান্ত নেন। সেই বৈঠকে জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক ও ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার আমির খসরু উপস্থিত ছিলেন।
গত ৬ ফেব্রুয়ারী হকার উচ্ছেদে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে অভিযান শুরু হয়। এরপর থেকে পুনরায় আন্দোলনে নামে হকার নেতারা।
তারই ধারাবাহীকতায় বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টার দিকে নারায়ণগঞ্জের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে হর্কাস লীগ নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক আসাদ মিয়া বলেন, আমরা নারায়ণগঞ্জের জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে দাবী রাখছি আগামী সোমবারের মধ্যে আমাদের একটা ব্যবস্থা করে দেন। যদি সমাধান না করেন তাহলে আগামী মঙ্গলবার থেকে আমরা আমাদের পরিবারের লোকজন নিয়ে রাস্তায় আন্দোলনে নামবো। আগামী মঙ্গলবার সকাল ১০টায় এই শহীদ মিনার থেকেই আমাদের আন্দোলন শুরু হবে।
আর কমিউনিস্ট পার্টি বাংলাদেশ(সিপিবি) নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি হাফিজুল ইসলাম বলেন, আমাদের হকার ভাইরা ফুটপাতের দখলদার নয়। তারা ফুটপাতে বসে ব্যবসা করে। পুলিশ তাদের মালামাল নিয়ে যায়। এটা রীতিমত ডাকাতি। মালামাল নিতে হলে নিয়ম আছে সাক্ষী লাগে সিজার লিস্ট করতে হয়। কিন্তু তারা এসব না করে মালামাল ডাকাতি করে নিয়ে যায়। এসব বন্ধ করেন নয়তো আমরা আদালতে যাবো।
বিকালে হকাররা নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের সাথে দেখা করতে যায়।
তখন তিনি বলেন, ফুটপাতে আমরা সুন্দর করে শহরকে সাজাতে চাই। আমাকে চ্যালেঞ্জ করবেন না। আপনারা পাঁচ হাজার হলে ভাবুন, শহরে কত লক্ষ মানুষ। আমরা কাদেরটা দেখবো। আপনারা আমার কথায় রাগ করবেন না, আমি ভালবাসা দিয়ে কথা বলছি। সোজা আঙ্গুলে ঘি না উঠলে আঙুল বাঁকা করবো। আমি যদি আজকে মুখ খুলি তাহলে পুলিশ লাগবে না। আমার ছাত্রলীগ-যুবলীগ, জাতীয় পার্টি, বিএনপি সবাই একমত। মানুষকে কষ্ট দিতে পারবে না।