নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে নির্বাচনে অনিয়ম, জাল ভোট, এজেন্টদের তুলে নেয়া ও সংসদ সদস্যের প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ এনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন দোয়াত কলম প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহজালাল মিয়া৷ শাহজালাল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের দুই বারের সাবেক চেয়ারম্যান।
শাহজালালের দাবি এই নির্বাচনকে গণতান্ত্রিক নির্বাচন বলা চলে না৷ এটা সংসদ সদস্যের নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন।
মঙ্গলবার বিকেলে আড়াইহাজার বাজার এলাকার নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে শাহজালাল এসব কথা বলেন।
শাহজালাল তার বক্তব্যে বলেন, ‘ আমি ১৩৯টি কেন্দ্রের প্রতিটিতে এজেন্ট দিই। সংসদ সদস্যের লোকজন প্রতিনিয়ত তাঁদের হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল। গত রাত থেকে এজেন্টদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের ও স্বজনদের তুলে নিয়ে এসে হুমকি দেয়া হয়।
কিছু এজেন্ট পালিয়ে থেকে সকালে কেন্দ্রে যেতে চাইলে তাঁদের তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করে বেধে রাখা হয়। পরে একজন ম্যাজিস্ট্রেট গিয়ে আমার এজেন্টদের উদ্ধার করে এবং অভিযুক্ত একজনকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়।’
নির্বাচনে জাল ভোটের অভিযোগ এনে তিনি বলেন, বেলা এগারোটা পর্যন্ত তিন চার শতাংশ ভোট হয়৷ বারোটার পর থেকে ঘোড়া ও আনারস প্রতীক যৌথভাবে কেন্দ্র দখল করে নেয়। তারা জাল ভোট দেয়। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। দুপ্তারায় সংরক্ষিত নারী ভাইস চেয়ারম্যান শাহিদা মোশাররফ জোর করে সিল মেরেছে। জাহানারা বেগম বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের খাবার বিতরণ করেছে ঘোড়া প্রতীকের এজেন্টরা। এ থেকে প্রমাণ হয় ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর লোকজন যোগসাজশে কেন্দ্র দখল করেছে।’
এই সময় সাবেক এই আওয়ামী লীগ নেতা দাবি করেন এই নির্বাচন গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে হয়নি। সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পারেনি। সংসদ সদস্যকে নিরপেক্ষ রেখে পুনরায় ভোটের দাবি করেন তিনি।
আড়াইহজারে চেয়ারম্যান পদে শাহজালাল মিয়া (দোয়াত কলম প্রতীক),উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি কাজী সুজন ইকবাল (আনারস প্রতীক) এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম স্বপন (ঘোড়া প্রতীক) নির্বাচন করেছেন।
নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের সরকার দলীয় হুইপ নজরুল ইসলাম বাবু সাইফুল ইসলামকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করে তার পক্ষে প্রকাশ্যে নির্বাচনের মাঠে নামেন।
আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল ইসলাম এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে জেলা মহিলা লীগ নেত্রী শাহিদা মোশারফ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে এই দুই পদে মঙ্গলবার ভোট গ্রহণ হয়নি।
তার আগে সকাল আটটায় উপজেলার ১৩৯ টি কেন্দ্রে একযোগে ভোট গ্রহণ শুরু হয়।