নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, আমরা জাষ্ট নারায়ণগঞ্জকে সুন্দর করতে চাই। এমন একটা নারায়ণগঞ্জ দেখতে চাই যেখানে রাত ১২ টায় আমাদের মেয়েরা যেন নির্বিঘ্নে চলাফেরা করতে পারে। আমরা নারায়ণগঞ্জ সব সময় পথ দেখিয়েছি। ৫২ থেকে আরম্ভ করে করে সব সময় করে এসেছি। চলেন আমরা সারা বাংলাদেশকে পথ দেখাই।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের দ্বিতীয় তলায় সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সাংবাদিকদের ওয়াদার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, প্রেস ক্লাবের নির্বাচনে পরে আমি সিনিয়র সাংবাদিকদের কাছে একটা জিনিস চেয়েছিলাম। সেদিন আপনারা আমাকে ওয়াদা করেছিলেন আপনারা আমাকে সাহায্য করবেন। আমার সেই জিনিসটা কী? মাদক, সন্ত্রাস, ইভটিজিং, চাঁদাবাজি, ভূমিদস্যুতা বন্ধ করতে হবে। মূলত মাদক থেকে এই চারটা বিষয় এসেছে। এই মাদক থেকে কিশোর গ্যাং, কিশোর গ্যাং থেকে সন্ত্রাস আর সন্ত্রাস থেকে চাঁদাবাজি ও ভূমিসদ্যুতা এসেছে। এগুলো কারা তৈরি করেছে? হয়তো আমার আপনার আশেপাশের লোকজন এর সাথে জড়িত রয়েছে। হয়তো অনেক সাংবাদিক জড়িত রয়েছে। সমাজের বিভিন্ন পেশার হোয়াইট কালারের লোকেরা জড়িত রয়েছে। তারা সরাসরি কাজ করে না, পেছন থেকে কাজ করছে। পুলিশ- প্রশাসনের কেউ কেউ জড়িত রয়েছে।
সাংবাদিকদের নিয়ে মাঠে নামতে চান উল্লেখ করে শামীম ওসমান বলেন, আমি মাঠে নামতে চাইছি। আমাকে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র সাংবাদিকরা কথা দিয়েছিলেন ওনারা আমার উদ্যোগে থাকবেন। আমি এই কাজটি করছি শুধুমাত্র আল্লাহকে খুশি করার জন্য। আমি আমার কাজ শুরু করতে চাই। আমি কোন দল দেখবো না এখানে, সমস্ত দলকে এখানে আহবান জানাবো। আমি সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে আহ্বান জানাবো। প্রথমে আমরা নারায়ণগঞ্জ-৪ ও ৫ আসনে কাজ শুরু করবো। এই দুই আসনে ৮৪ টার মত ওয়ার্ড আছে। আমরা যদি প্রতি ওয়ার্ড থেকে এক হাজার করে লোক নেই তাহলে ৮৪ হাজার লোক হয়। ্এর সাথে তার পরিবারের সদস্যদের যোগ করলে চার লাখ লোক হবে। এরা যদি চায় নারায়ণগঞ্জে মাদক বিক্রি হবেনা, আমার তো মনে হয়না কেউ সাহস করতে পারবে।
আরো পড়ুন: ‘শামীম ওসমান আলাদা চিজ হ্যায়‘
প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রত্যাশা সংগঠনের ক্লাব করবেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি একা কাজ করে যাবো। আর আমি যখন ভালো কাজ করবো তখন অনেকে এগিয়ে আসবে। এর মধ্যে অনেকে রাজনীতি খোঁজার চেষ্টা করবে। আমি আল্লাহর নামে শপথ করে বলতে চাই, এর মধ্যে কোন রাজনীতি নাই। আর আমি রাজনীতির জন্য এটা করছিনা। সাংবাদিক, পলিটিশিয়ান ও শিক্ষক সমাজ যদি এক সাথে আগায় আমি বিশ্বাস করি, এক মাসের মধ্যে নারায়ণগঞ্জের কোথাও মাদক বেচা সম্ভব হবে না। আমার মুখ যদি সত্য কথা বলে, আমার ক্যামেরা যদি সত্য কথা বলে ও কলম যদি সত্য লেখে তাহলে আমি বিশ্বাস করি আমাদের নারায়ণগঞ্জকে কলুষিত করার ক্ষমতা কারো নাই। এটা আমাদের নারায়ণগঞ্জ, এটা আমাদের জন্মভূমি আমরা এখানে মারা যাবো। সুতরাং চলেন আমরা সবাই সামনের দিকে আগাই। আমি প্রথম দাওয়াতটা প্রেসক্লাবকে দিলাম। তারা যদি সম্মতি দেয় তাহলে আগামী ২৭ তারিখ শনিবার একেএম সামসুজ্জোহা ক্রীড়া কমপ্লেক্সের মাঠে সমাজের সমস্ত ভালো মানুষগুলোকে নিয়ে মতামত নিবো। তাদের কথা শোনার পরে আমরা একটা সিদ্ধান্তে যাবো। তখন সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমরা এগোবো। প্রতিটা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে আমরা প্রত্যাশা সংগঠনের ক্লাব করবো। এটার মধ্যে কোন রাজনীতি নেই। অন্য কোন উদ্দেশ্য নাই।
শামীম ওসমান মাথা নত করবেন না উল্লেখ করে বলেন, আমাদের প্রশাসনের দরকার নেই। আমরা এর জন্য যথেষ্ঠ। তখন দেখবেন পুলিশ অযথা কাউকে ধরবে না। আর ধরলে কাউকে সহজে ছাড়বে না। কারণ আমরা সমাজের সব শ্রেণি পেশার মানুষকে নিয়ে কাজ করবো। আমি মনে করি আমাদের সমাজে ভালো মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। কিন্তু সমাজের অল্প সংখ্যক খারাপ মানুষের কাছে ৯০ বা ৯৫ শতাংশ মানুষ জিম্মি হয়ে থাকে। তবে এই প্রশ্নে আমি আল্লাহ ছাড়া কারও সাথে আপোষ করবো না। মাথা নত করবো না।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আরিফ আলম দিপু, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জীবন, সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুস সালাম, সহ জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের সর্বস্তরের সাংবাদিকবৃন্দ।