কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করা তিন নেতাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, তিন জনের মধ্যে একজন তার বাবাকে ফোন বলেছেন, ‘আমি আত্মগোপনে রয়েছি নিরাপদে থাকার জন্য।’ সোস্যাল মিডিয়াতে তারা এরকম খবর প্রচার করেছে। এরকম খবর পেয়ে তাদেরকে সেফ কাস্টোডিতে নিয়েছি। আমরা তাদের কাছে জিজ্ঞাসাবাদ করছি, কারা তারদের আক্রমণ করতে চায়। এসব জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আমরা সিদ্ধান্ত নেব তাদের বিষয়ে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। শনিবার (২৭ জুলাই ) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
গুজব ছড়ানো প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, একটি মহল সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এমন সব গুজব ছড়াচ্ছে- যেগুলো শুনছে সাধারণ মানুষও ঠিক থাকতে পারে না। বিভ্রান্ত হচ্ছে। আপনারা সাংবাদিক, আপনারা গুজব থেকে দেশবাসীকে বাঁচাবেন।এরা একদিকে গুজব ছড়িয়েছে, আরেকদিকে আক্রমণ করেছে। এই রকম সংঘবদ্ধ আক্রমণ শুধুমাত্র ডেডিকেটেড ফোর্সরা করতে পারে। যেটা জামায়াত-বিএনপি ও জঙ্গীদের কাছে রয়েছে। আমরা প্রমাণ পাচ্ছি, এটি তাদের সংঘবদ্ধ আন্দোলন ও আক্রমণ। পুলিশ বাহিনী এগুলোকে অত্যন্ত ধৈর্যের সাথে মোকাবেলা করেছেন। তিনি বলেন, আপনারা এটাও দেখেছেন কতগুলো বাচ্চা-বাচ্চা ছেলে ওদের বয়স হয়নি, তাদেরকেও সামনে নিয়ে আসছে। তাদেরকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে। সেজন্য আমাদের পুলিশকে সময় নিতে হয়েছে। তারা সরে গেলে তারপর পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। আমার অনুরোধ হলো যারা গুজব ছড়াচ্ছে- তাদের বিরুদ্ধে আপনাদের অবস্থান থাকবে। সত্যি ঘটনা কী সেটা আপনারা দেশবাসীকে জানাবেন। ছাত্রদের মিসগাইড করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ছাত্রদের আন্দোলনের ফাঁকে ছাত্রদের মিসগাইড করে যে ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে, যে হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটিয়েছে, যারা মৃত্যুবরণ করেছেন এদের অনেকে সাধারণ মানুষ। এছাড়া আমাদের আওয়ামী লীগের এবং ছাত্রলীগের অনেকে শাহাদাত বরণ করেছেন। এছাড়া তিন জন পুলিশ শাহাদাত বরণ করেছেন। কোটা এখন ৯৮ শতাংশ মেধায় চলে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আপনারা জানেন আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছি। তাদের সন্তানদের ইতোমধ্যে ৩০ বছর পার হয়ে গিয়েছে। সুতরাং মুক্তযোদ্ধাদের কোটা এখন আর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে থাকবে না। এটা অলরেডি মেধার তালিকায় চলে গেছে। মেধায় এখন ৯৮ শতাংশ চলে গেছে। কোটা আন্দোলনকারী ছাত্ররা নিজেদের দ্বারা নিয়ন্ত্রণিত নয় বলে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমরা ভেবেছিলাম ছাত্ররা তাৎক্ষনিকভাবে এটাকে স্বাগত জানাবে এবং আন্দোলন উইথড্র করবেন। এবং শিক্ষা ভবনে ফিরে যাবেন। কিন্তু আমরা দুঃখের সাথে দেখলাম যে, তারা সেই কাজটি করেনি। কারণ তারা তাদের দ্বারা কন্ট্রোল নয়। এটি প্রমাণ হয়েছে গত কয়েকদিনে ধ্বংসের লীলাখেলা দেখে। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি নুরুল ইসলাম, র্যাব-১১ এর সিইও তানভীর মাহমুদ পাশা, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক, নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল সহ প্রমুখ।