নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের পুলে অবস্থিত এস আলম ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের এক চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় এক নারীর গর্ভের সন্তানের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) রাতে ওই নারীর স্বামী কাওছার মাহমুদ বাদী হয়ে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ডা. বোরহানউদ্দিন, শহিদুল ইসলাম ও জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সিদ্ধিরগঞ্জের পূর্ব কলাবাগ চেয়ারম্যান বাড়ির কাওছার মাহমুদের স্ত্রী মাকসুদা আক্তার অন্তঃসত্ত্বা হলে সিদ্ধিরগঞ্জ পুলে অবস্থিত এমএস টাওয়ারে এস আলম ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কর্মরত গাইনি চিকিৎসক শারমিনের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা করান। ডা. শারমিন ওই প্রতিষ্ঠানে মাকসুদা আক্তারকে বিভিন্ন সময় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। একপর্যায়ে মাকসুদার শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে তার স্বামী তাকে শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) সকালে নারায়ণগঞ্জ খানপুর আল হেরা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে ওইদিন বিকেলে মৃত সন্তান প্রসব করেন মাকসুদা।
মৃত সন্তান প্রসবের কারণ জানতে চাইলে হাসপাতালের চিকিৎসক জানান, এস আলম ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রিপোর্ট পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চিকিৎসক রোগীকে ভুল চিকিৎসা দিয়েছেন। সে কারণে সন্তান কয়েকদিন আগেই মায়ের গর্ভে মারা গেছে।
পরে ওই ভুল রিপোর্টের বিষয়ে জানতে মঙ্গলবার এস আলম ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যান কাওছার মাহমুদ। এসময় প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ডা. বোরহান উদ্দিন, শহিদুল ইসলাম ও জহিরুল ইসলাম তাকে বিভিন্ন হুমকি-ধমকি ও খারাপ আচরণ করে একটি কক্ষে আটকে রাখেন। খবর পেয়ে স্বজনরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কাওছার মাহমুদ বলেন, ‘আমার স্ত্রীর সন্তান প্রসবের নির্ধারিত সময় পার হলেও রিপোর্ট ভুলের কারণে গর্ভেই সন্তানের মৃত্যু হয়। স্ত্রীর শারীরিক অবস্থা দেখে ডা. শারমিন জানান, পেটে পানি জমে গেছে তাই বাচ্চা বড় দেখাচ্ছে। তার কথায় আস্থা রাখতে না পেরে স্ত্রীকে আল হেরা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর চিকিৎসক জানান, সন্তান আগেই গর্ভে মারা গেছে।’
এস আলম ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের রিপোর্ট ভুল নাকি আল-হেরা হাসপাতালের রিপোর্ট ভুল, বিষয়টি দুই চিকিৎসককে একসঙ্গে নিয়ে বসে রোগীর স্বামীকে যাচাই করতে বলি। কিন্তু তিনি বসার সুযোগ না দিয়ে সব দোষ আমাদের ওপর চাপাচ্ছেন। এ নিয়ে কথা- কাটাকাটি হয়েছে। তাদের আটক করে রাখার অভিযোগ সঠিক নয়।’
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোজাম্মেল হক জানান, এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।