নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বিয়ের আসর থেকে কনেকে উঠিয়ে নিতে প্রাক্তন প্রেমিক কাউসার ও তার লোকজন বিয়ে বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় কাউসার বরপক্ষের গাড়ি ভাঙচুর ও মারধর করে কনের বাড়ি থেকে বের দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই হামলায় অন্তত ৮ জন আহত হয়েছে। বুধবার বিকেলে উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের বলাইখা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে কনের পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে বলে জানান।
কনের বাবা মহিউদ্দিন হাজী অভিযোগ করে বলেন, ভুলতা ভায়েলা এলাকার কাউসার নামে এক যুবক তার মেয়ে সাদিয়া আক্তার (১৯)কে দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। কাউসার ভুলতা এলাকায় ফুটপাত থেকে চাঁদাবাজি করে বেড়ায়। কাউসারের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে মহিউদ্দিন তার মেয়েকে বিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত নেন। বুধবার দুপুরে মহিউদ্দিনের বাড়িতে ঘরোয়াভাবে বিয়ের আয়োজন করা হয়। সাদিয়ার বিয়ের খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে কাউসার ও তার লোকজন পিস্তলসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালিয়ে সাদিয়াকে জোর পূর্বক উঠিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালায়। পরে পরিবারের লোকজন তাদেরকে বাঁধা দিলে তারা হুমকি-ধমকি দিয়ে চলে যায়।
তিনি আরও বলেন, বুধবার বিকেলে বরযাত্রী কনের বাড়িতে এসে বিয়ের কার্যক্রম শুরু করলে কাউসার ও তার বাহিনীর লোকজন পিস্তল ও রামদাসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বরযাত্রীর ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাদের মারধর করতে থাকে। বরপক্ষকে বাঁচাতে কনের বাড়ির লোকজন এগিয়ে আসলে তারাও হামলার শিকার হয়। এতে পনির, নিপা আক্তার, বৃষ্টিসহ মোট ৮ জন আহত হয়। পরে হামলাকারীরা বরপক্ষের লোকজনকে মারধর করে কনের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। এ সময় হামলাকারীরা বিয়ের বাড়িতে রান্না করা খাবার ফেলে দেন ও ঘরে প্রবেশ করে স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। বর্তমানে পরিবার নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় বসবাস করছেন বলেও অভিযোগ করেন। বুধবার রাতে মহিউদ্দিন রূপগঞ্জ থানায় অভিযোগ দিতে যেতে চাইলে কাউসার তাদের হুমকি ধমকি প্রদান করেন।
স্থানীয়রা জানান, কয়েক বছর আগে সাদিয়ার সঙ্গে কাউসারের প্রেমের সম্পর্ক থাকলেও এখন নেই। সম্পর্ক না রাখার কারণে কাউসার সাদিয়াকে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করে আসছিল।
স্থানীয়রা আরও জানান, কাউসার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলামিন হোসেনের প্রশ্রয়ে গাউছিয়া মার্কেটের সামনের ফুটপাত থেকে চাঁদাবাজি করেন। যুবলীগ নেতার প্রশ্রয়ে তিনি বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন বলেও অভিযোগ জানান তারা। এ ব্যাপারে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলামিন হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। অভিযোগের বিষয়ে কাউসার বলেন, সাদিয়ার সাথে আমার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তবে বরযাত্রীদের ওপর হামলা ঘটনা মিথ্যা। এ ব্যাপারে আমার জানা নেই।
এ ব্যাপারে ভুলতা ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ ধরনের ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। মেয়ের পরিবারের লোকজন লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।