নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ক্রোনি অ্যাপারেলস নামে রপ্তানিমুখী একটি কারখানায় বকেয়া বেতন পরিশোধ না করে অর্ধ শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ছাঁটাই করার অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাশিপুর হাটখোলা এলাকায় অবস্থিত কারখানাটির সামনে অবস্থান নেন।
ক্রোনী অ্যাপারেলসের সিনিয়র অফিসার আফাজ হোসেন বলেন, আমাদের ৫৮ জনকে ছাঁটাই করে ছবিসহ গেটে টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ আমাদের চারজনকে পৃথকভাবে ডেকে নিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করে। তবে আমরা এভাবে ম্যানেজ হব না। আমরা জানি, আমাদেরও কিছুদিন পর আবারও লাথি মেরে বের করে দেবে। তারা চাচ্ছে, ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত বেতন দিয়ে বাদ দেবে৷ কিন্তু আমরা যাবতীয় বকেয়া বেতন বুঝে পেয়েছি, এই মর্মে স্বাক্ষর রাখতে চায়। সকল শ্রমিক ফতুল্লা থানায় এসেছি অভিযোগ দায়ের করতে।
তিনি বলেন, গত ৩ মাস কীভাবে আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি। বাড়িওয়ালা প্রতিনিয়ত ভাড়ার জন্য চাপ দিচ্ছে, মহল্লার দোকানে হাজার হাজার টাকা বাকি জমে গেছে। এমন অবস্থায় অমানবিকের মতো মালিকপক্ষ আমাদের ছাঁটাই করেছে। সমাধান না পেলে আমরা শ্রম আদালতে যাব।
কারখানার আরেক কর্মী আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের রুলস হচ্ছে কাউকে চাকরিচ্যুত করতে হলে তাকে তিন মাসের বেতন দিতে হবে। আমরা এখানে একেকজন ৮ থেকে ১০ বছর কাজ করছি। গত ৩ মাস কেবল হরতাল, অবরোধ, নির্বাচন ইত্যাদির অজুহাত দিয়ে বেতন দেয়নি। এখন বেতন ছাড়াই ছাঁটাই করেছে তারা।
এ বিষয়ে ক্রোনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসলাম সানী বলেন, আমরা তাদের দেনা-পাওনা পরিশোধ করব। কারখানায় মানুষ বেশি হয়ে গেলে একটু অ্যাডজাস্টমেন্ট করতে হয়। তাদের দেনা-পাওনা হিসেব করছি, দ্রুতই অ্যাকাউন্টে দিয়ে দেব। তাদের বলা হয়েছে চলতি মাসের বেতন নিয়ে যেতে। পরবর্তীতে বাকি বেতনগুলো পর্যায়ক্রমে পরিশোধ করা হবে।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আযম মিয়া বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আমরা ব্যবস্থা নেব।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ ডিসেম্বর ক্রোনি গ্রুপের ‘ক্রোনি টেক্স সোয়েটার লিমিটেড’ কারখানা লে অফ ঘোষণা করা হয়। এতে প্রায় ৮০০ শ্রমিক চাকরিচ্যুত হয়। পরবর্তীতে চলতি মাসের ৮ ফেব্রুয়ারি একই গ্রুপের ‘অবন্তি কালার টেক্স লিমিটেড’ এর শ্রমিকরা দুই মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেন।