‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়ার পর গুলিতে প্রাণ যায় বিকেএমইএ ভাইস প্রেসিডেন্ট সাব্বির আলম খন্দকারের। তার নাম অনুসারে বিকেএমইএ‘র সভাকক্ষের নাম রাখা হয়। চেম্বার অব কর্মাসে স্থাপন করা হয় শাব্বির আলমের ছবি। সংগঠন গুলোর ভবন দু‘টির কোথাও এখন আর সাব্বিরের ছবি নেই’।
রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারী) সাব্বির আলম খন্দকারের ২১তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত শোক র্যালীতে দুঃখের সাথে কথাগুলো বলেন সাব্বির আলমের ভাই তৃনমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমূর আলম খন্দকার।
মৃত্যুর পূর্বের স্মৃতি চারণ করে তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, সাব্বির বিকেএমইএ ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন, আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সদস্যও ছিলেন। নারায়ণগঞ্জ হল সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য। তখন জেলা প্রশাসন ও ৪২টি প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি সভা হয়েছিলো। ওই সময় দাঁড়িয়ে বলেন, ‘আমার জানাযায় অংশগ্রহণ করার আহবান জানিয়ে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে বক্তব্য শুরু করছি। সন্ত্রাস, ঝুট সন্ত্রাসসহ বিভিন্ন অপরাধ তুলে ধরেছেন। এতে সন্ত্রাস চাঁদাবাজ মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসন এ্যাকশন শুরু হয়। এর জের ধরে সাব্বিরকে হত্যা করা হলো। তাকে এই হত্যা কারণে আপনারা প্রতি বছর স্মরণ করেন।
বিকেএমইএ নিয়ে তৈমূর বলেন, হত্যার পর বিকেএমইএ থেকে আমাদের পরিবারকে ২৫ লাখ টাকা অফার দিতে চেয়েছিল। আমরা সেই টাকাটি গ্রহণ করিনি, বলেছি তাকে (সাব্বির) সম্মানটুকু করবেন। আমরা টাকাটা চাই না। করোনার মধ্যে খোরশেদ যে ভুমিকা রাখছিলো তখন, সেলিম ওসমান সাহেব ১০লাখ টাকা দিতে চেয়েছিলো। সেই টাকাও নেয়নি।
দুঃখের সাথে বলতে চাই, বিকেএমএই সভাকক্ষে সাব্বির আলম খন্দকারের নাম রাখা হয়েছিলো। আমি জানতে পারলাম, সেই নামটি এখন উঠিয়ে ফেলা হয়েছে। বিকেএমইএর নতুন ভবনে তার নামকরণে সভাকক্ষ রাখা হয়নি। আমি সেলিম ওসমান এমপির সাথে কথা বলেছি, আমরা আপনাদের কাছ থেকে কোন আর্থিক সহযোগিতা চাই না। যে কারণে সাব্বিরের হত্যা হয়ে ছিলো, ওই কারণে আপনাদের বোর্ড সভা তার নাম করন করেছিলেন। আপনারা নতুন ভবনে সাব্বিরের নামটি পুনরায় স্থাপন করুণ। চেম্বার অব কর্মাসে কাছে অনুরোধ করেছি, আপনারা সাব্বিরের ছবি স্থাপন করুন। আগে চেম্বারে সাব্বিরের ছবি ছিলো, এখন সেই ছবিটি নেই। ব্যবসায়ীদের স্বার্থে সাব্বিরের জীবন গেলেও তাকে সম্মান না করলে আপনারা প্রশ্নবিদ্ধ হবেন।
মাদক ইভটিজিং সন্ত্রাস চাঁদাবাজ নগরে পরিণত হয়েছে নারায়ণগঞ্জ। কয়েক মাস আগে সন্ত্রাস করতে গিয়ে পুলিশ আহত হলেও কোন এ্যাকশন নেয়া হয়নি। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি কয়েকবার বলেছেন, মাদক নিমূল করবেন। মাসদাইর এলাকায় বেশি মাদকের জোন রয়েছে, সবচেয়ে বেশি মাদক রয়েছে চার আসনে। যারা এই দেশ থেকে মাদক সন্ত্রাস চাঁদাবাজমুক্ত করতে হলে সাব্বির নামে শপথ নেন। তিনি যেভাবে আন্তরিকভাবে চেয়েছিলো, আপনার সেভাবে করুন। শুধু লোক দেখানো ও পত্রিকা কভারেজ নেয়া জন্য হলে মাদকমুক্ত হবে না।
নিহত সাব্বির আলম খন্দকারের মেয়ে ফাতেমা তুজ জোহরা বলেছেন, আমার বাবা হত্যা বিচার হবে। আসামীরা বার বার তারিখ দিয়ে বিচার দেরি করছে। আসামী বলেছে, তারা দেশে বাহিরে ছিলো। কিন্তু হত্যাটি বিশেষ পরিকল্পিত ছিল, তারা পরিকল্পনা মতামতে দেশের বাহিরে থেকে হত্যা করেছে আমার বাবাকে। তিনি আপনাদের সুশৃঙ্খল নারায়ণগঞ্জ গড়ে তোলা জন্য নিজের জীবন দিয়েছেন।