শেষ সময়ে জমে উঠেছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৮ তম আসর। লাখো ক্রেতা-দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে মেলা প্রাঙ্গণ। স্টল মালিক ও আয়োজকরা বলছেন, শেষ সময়ে এসে ক্রেতা-দর্শনার্থীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। এতে বেশ সন্তুষ্ট তারা।
ছুটির দিন শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারী) নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচলে বাণিজ্য মেলা ঘুরে এই দৃশ্য দেখা যায়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, দুপুর থেকে মেলা প্রাঙ্গণে দর্শনার্থীদের আনাগোনা বাড়তে শুরু করে। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতেই দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা যায়। সন্ধ্যা ঢল নামে।
মেলার স্টল মালিক ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, মেলার শেষ সময়ে এসে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। অন্য দিনের তুলনায় আজ বেচা-বিক্রিও বেশি হয়েছে। এ কারণে সপ্তাহের অন্য দিনগুলোতে অপেক্ষায় থাকি ছুটির দিন শুক্রবারের, যাতে এ দিন একটু বেশি বিক্রি করতে পারি।
আন্দালুস নামের প্রসাধনী স্টলের বিক্রেতা লাভলী আক্তার বলেন, ‘শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় লোকসমাগম একটু বেশি হয়েছে। তাছাড়া মেলার শেষ সময়ে লোক-সমাগম বেড়ে যায়। একারণে বিক্রিও বেড়েছে। তাছাড়া প্রসাধনী পণ্য সপ্তাহের অন্য দিনেও বেশ ভালো বিক্রি হয়ে থাকে। আশা করছি, মেলার শেষ কিছুদিন ভালো বেচা-বিক্রি হবে।
এস কে বি ক্রোকারীজের স্টলে চলছে ৪০ শতাংশ ছাড়। এ বিষয়ে স্টলের বিক্রেতা রুবেল আহমেদ বলেন, কিছু পণ্যের উপরে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। এসব পণ্যে ৪০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়েছে। তবে আজ অন্য দিনের তুলনায় ক্রেতা অনেক হয়েছে, বিক্রিও বেশি হয়েছে। মেলার শেষ সময়ে এসে বিক্রির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।
রাজধানীর উত্তরা থেকে বাণিজ্য মেলায় বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে এসেছেন কমল হোসেন। তিনি বলেন, ছুটির দিনে একটু সময় পেয়েছি। তাই বন্ধুদের নিয়ে মেলা ঘুরে দেখলাম। বেশ ভাল লেগেছে। ব্লেজার কিনেছি, রুটি মেকার কিনেছি।
সাইনবোর্ড এলাকা থেকে স্বামী-সন্তান নিয়ে মেলায় এসেছেন লাকী বেগম। তিনি বলেন, ‘ছুটির দিনে স্বামী ও সন্তানকে নিয়ে মেলায় কেনাকাটা করতে চলে এসেছি। অনেক কিছু কিনেছি; বাচ্চার জন্য ব্লেজার, খেলনা, রান্নার কাজে ব্যবহৃত নানা সরঞ্জাম, জামদানী শাড়ি সহ নানা জিনিস কিনেছি। তবে আজ মেলায় অনেক লোক হয়েছে।
লক্ষাধিক লোকসমাগম হয়েছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সচিব বিবেক সরকার বলেন, ‘ছুটির দিনে অনেক লোক সমাগম হয়েছে, প্রায় লক্ষাধিক লোক হয়েছে। মেলা শেষে রাতে টিকিট গণনা করতে সঠিক সংখ্যা বলতে পারবো। তবে মেলার শেষ সময়ে সে লোকসমাগম আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। আশা করছি, শেষ কয়েকদিন আরও লোক-সমাগম বাড়বে।
আয়োজকরা জানিয়েছে, এবারের আসরে স্টলের সংখ্যাও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫১ টি। যা বিগত বছরে ছিল ৩৩১ টি। দেশীয় উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি সিঙ্গাপুর, তুরস্ক, হংকং, ইরান, ভারত, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে অংশ নেওয়া ব্যবসায়ীরা মেলায় নিজেদের পণ্য বিক্রি করবেন। গত বছরের তুলনায় এ বছর মেলায় প্রবেশমূল্যও বেড়েছে। এ বছর সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য প্রবেশমূল্য ৫০ টাকা ও ১২ বছরের কম বয়সীদের জন্য ২৫ টাকা টিকিটের মূল্য ধরা হয়েছে। যা গত বছর ছিল যথাক্রমে ৪০ ও ২০ টাকা।