জাপায় ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে রওশন এরশাদ বলয়। জাপার গুরুত্বপূর্ণ নেতারা একে একে গিয়ে যুক্ত হচ্ছেন রওশন শিবিরে। ইতোমধ্যে রওশন এরশাদের নেতৃত্বে সংঘটিত হয়েছেন জাপার একঝাঁক গুরুত্বপূর্ণ নেতা। এই তালিকায় রয়েছেন দুই কো চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা ও কাজী ফিরোজ রশীদ। প্রেসিডিয়াম মেম্বার সুনীল শুভ রায়, শফিকুল ইসলাম সেন্টু। এবার এই তালিকায় যুক্ত হতে যাচ্ছেন জাতীয় পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব ও নারায়নগঞ্জ থেকে নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা।
এবার নির্বাচনের পর জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর বিরুদ্ধে যে আন্দোলন শুরু হয় তার নেপথ্যে ছিলেন কাজী ফিরোজ রশিদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা ও লিয়াকত হোসেন খোকা। প্রথম দিনেই কাজী ফিরোজকে বহিষ্কার করায় আন্দোলনের পুরো নিয়ন্ত্রণ চলে যায় বাবলা ও খোকার হাতে। গতকাল রওশন এরশাদের সংবাদ সম্মেলনে গিয়ে সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির দায়িত্বগ্রহণ করেছেন বাবলা।
ফলে আলোচনা শুরু হয়েছে এই আন্দোলনের আরেক গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী নেতা লিয়াকত হোসেন খোকার অবস্থান নিয়ে। গুঞ্জন রয়েছে দ্রুতই খোকাও রওশন শিবিরে যোগ দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে লিয়াকত হোসেন খোকা বলেন, আমি তো জাতীয় পার্টিতেই রয়েছি। রওশন এরশাদ কিংবা জি এম কাদের উভয়ই তো জাতীয় পার্টির নেতা। জাপায় চলমান বিভক্তিতে আপনার অবস্থান কোন শিবিরে হবে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন আমি জাপাতেই থাকব।
দ্বাদশ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যে ২৬ টি আসনে জাতীয় পার্টির সঙ্গে সমঝোতা করে সেই তালিকায় আবু হোসেন বাবলা ও লিয়াকত হোসেন খোকার জায়গা হয়নি। তারা নির্বাচনে অংশ নিয়ে লড়াই করলেও আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সঙ্গে হেরে যান। নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া নিয়ে যখন জাপায় অনিশ্চয়তা চলছিল তখন খোকা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে অবস্থান করতেন। কিন্তু আসন সমঝোতায় জায়গা হারানোর পর থেকে কার্যালয় যাওয়া বন্ধ করে দেন তিনি।
নির্বাচন পরবর্তী সময়ে জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর বিরুদ্ধে নেতাকর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে ফের কার্যালয়ে যান খোকা। তিনি ও বাবলা মিলে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে কৌশলে পরিস্থিতি শামাল দেন ও নিয়ন্ত্রণ হাতে রাখেন। এরপর গত ১৪ জানুয়ারি রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা জমায়েত হয়ে সভা করেন। এই সভাও কৌশলে আবু হোসেন বাবলা ও ভাইস চেয়ারম্যান লিয়াকত হোসেন খোকা মিলে নিয়ন্ত্রণ করেন। বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের কার্যত নিয়ন্ত্রণ হাতে রাখেন এই দুই নেতা।