ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ২৮তম আসরে দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে বিখ্যাত রাজা মামার চা। প্রতিদিনই হাজারো ক্রেতা-দর্শনার্থীর আগমন ঘটছে মেলা প্রাঙ্গণে। রাজার বেশে পরিবেশন করা এ চায়ে মুগ্ধ দর্শনার্থীরা। ফলে মেলায় আগত ক্রেতা-দর্শনার্থীর আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে এই রাজা চা। রাজকীয় এ চায়ের স্বাদ নিতে মেলায় প্রবেশ করেই দর্শনার্থীরা ছুটে আসছেন চায়ের এ স্টলটিতে।
রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচলে মেলা প্রাঙ্গণে বসা এই চায়ের স্টলটি ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, রাজা চায়ে কাঠবাদাম, কাজুবাদাম, পেস্তাবাদাম, জাফরানসহ নানা জাতের মসলা, তালমিছরি, গরুর দুধ ও গুঁড়া দুধ মেশানো হয়। এছাড়া এটি বালুর তাপে গরম করা হয়। প্রতি কাপ চা বিক্রি করা হয় মাত্র ৫০ টাকায়। চায়ের স্বাদ নেওয়ার জন্য চা পিপাসুদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে।
বন্দর উপজেলার বাবুপাড়া থেকে মেলায় এসেছেন জামিল আহমেদ নামে এক দর্শনার্থী। তিনি বলেন, রাজা মামার চা খুবই সুস্বাদু। তাই মেলায় এসে রাজা মামার চায়ের দোকানে এসেছি। কিন্তু দোকানে এসে ভিড় দেখে দীর্ঘ লাইন ধরে চা খেতে হচ্ছে। তবুও ভালো লাগছে।
রূপগঞ্জ থেকে মেলায় আসা রানী আক্তার নামের আরেক দর্শনার্থী জানান, রাজা মামার চা খুবই অসাধারণ। তাছাড়া চায়ের পরিবেশন খুবই সুন্দর। সব মিলিয়ে খুব ভালো লেগেছে।
জানা গেছে, রাজা চায়ের স্টলের মালিকের নাম আসলে রাজা নয়। তার আসল নাম আজহার উদ্দিন (৪৪)। গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার নওধার গ্রামে। ছোটবেলা থেকে অনেক কষ্ট করে আজ এ অবস্থায় এসেছেন। অভাবের তাড়নায় একবার দুবাইয়ে যান তিনি। ২০১৮ সালে দেশে ফিরে তিনি চায়ের ব্যবসা শুরু করেন। বর্তমানে সারাদেশে ২৮টি শাখা রয়েছে তার।
রাজা নাম উপাধি দেওয়ার প্রসঙ্গে স্টল মালিক আজহার উদ্দিন বলেন, শুরুর দিকে দেশের মানুষ তার দামি চা খাবে কি না তা নিয়ে সন্ধিহান ছিলেন। কিন্তু তার তৈরি চায়ের স্বাদে মুগ্ধ হয়ে ক্রেতারা তাকে রাজা মামা উপাধি দিয়েছেন। গতবারের তুলনায় এবারের মেলায় তিনি চাপ্রেমীদের বেশি সাড়া পাচ্ছেন বলে জানান।
আয়োজকরা জানিয়েছে, এবারের আসরে স্টলের সংখ্যাও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫১ টি। যা বিগত বছরে ছিল ৩৩১ টি। দেশীয় উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি সিঙ্গাপুর, তুরস্ক, হংকং, ইরান, ভারত, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে অংশ নেওয়া ব্যবসায়ীরা মেলায় নিজেদের পণ্য বিক্রি করবেন। গত বছরের তুলনায় এ বছর মেলায় প্রবেশমূল্যও বেড়েছে। এ বছর সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য প্রবেশমূল্য ৫০ টাকা ও ১২ বছরের কম বয়সীদের জন্য ২৫ টাকা টিকিটের মূল্য ধরা হয়েছে। যা গত বছর ছিল যথাক্রমে ৪০ ও ২০ টাকা।