নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে ঘুষের ৪২ লাখ টাকা ভর্তি কার্টন উদ্ধার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একই সঙ্গে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ডিসি অফিসের সার্ভেয়ার মো. কাওসার আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে তাকে আদালতে হস্তান্তর করলে তাকে কারাগারে পাঠায় বিচারক।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছে আদালত পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) আসাদুজ্জামান।
এর আগে গত ১০ জানুয়ারি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মীদের হাতে কার্টনটিসহ এক ব্যক্তি ধরা পড়েন। এরপর বিষয়টি জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হলে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ওই কার্টন খুলে ৪২ লাখ টাকা পাওয়া যায়। এই টাকা গণনা শেষে জব্দ করা হয়। টাকার কার্টন জব্দের বিষয়ে জেলা প্রশাসক অফিস থেকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। একই সঙ্গে ওই টাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ট্রেজারিতে জমা রাখা হয়। পরে গত ১৪ জানুয়ারি এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক দুদকে চিঠি দেন।
ঘটনার বিষয়ে দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, গত ১০ জানুয়ারি রাত ১০টার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনের সড়কে সিদ্ধিরগঞ্জ রাজস্ব সার্কেলের আউটসোর্সিংয়ের সাবেক কর্মচারী মো. জাহিদুল ইসলাম সুমনের কাছে একটি কার্টন পাওয়া যায়। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নিরাপত্তা প্রহরী রিফাত হোসেন নেজারত ডেপুটি কালেক্টরকে ঘটনাটি অবহিত করেন। সুমনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ কার্টনে নগদ টাকা থাকার কথা স্বীকার করেন।
সচিব জানান, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে জব্দ তালিকা তৈরি করে দেখা যায়, কার্টনে ৪২ লাখ টাকা পাওয়া যায়, এতে এক হাজার টাকার ৩ হাজার ৭০০টি নোট এবং ৫০০ টাকার এক হাজারটি নোট পাওয়া যায়। প্রাথমিক তদন্তে ওই টাকার বিষয়ে জেলা প্রশাসক মনে করেন যে, জব্দ করা ৪২ লাখ টাকা দুর্নীতি সংশ্লিষ্ট অর্থ এবং ধারণা করা হচ্ছে এ কার্যক্রমের সঙ্গে আরও ব্যক্তিদের সম্পৃক্ততা রয়েছে। এরপর এ ঘটনায় গত ১৬ জানুয়ারি দুদকের নারায়ণগঞ্জ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে একটি মামলা হয়।
দুদক সূত্রে আরও জানা যায়, মামলায় ৪২ লাখ টাকার কার্টন বহনকারী মো. জাহিদুল ইসলাম ওরফে সুমন এবং ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সার্ভেয়ার কাওসার আমেদকে আসামি করা হয়। এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে থেকে আসামি সার্ভেয়ার কাওসার আহমেদকে গ্রেপ্তার করে আদালতে মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামি জাহিদুল ইসলাম সুমনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে।
পুরো ব্যাপারটি স্বীকার করে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক বলেন, আমরা নিজেরাই তাকে আটক করেছি এবং সচিবকে জানিয়েছি।