ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ নারায়ণগঞ্জের উপর দিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা হয়েছিল ১৯৬৯ সালে; এরপর একে একে চলে গেছে ৫৪ বছর। এখন আবারও শুরু হয়েছে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কার্যক্রম। ইতোমধ্যে সমিক্ষা শুরু করেছে রেলওয়ে মন্ত্রণালয়।
সংস্থাটি বলছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে রেলপথটির দূরত্ব প্রায় ৯০ কিলোমিটার কমবে, সাথে কমবে যাত্রাপথের সময়ও।
রেলওয়ে পরিকল্পনা দপ্তর সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের দূরত্ব ৩২৪ কিলোমিটার। বর্তমানে রেল অবকাঠামোতে চট্টগ্রাম থেকে একটি আন্তঃনগর ট্রেন কুমিল্লা, লাকসাম, আখাউড়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, আশুগঞ্জ, ভৈরব, নরসিংদী, টঙ্গী, বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন হয়ে বৃত্তাকার পথে ঘুরে ঢাকায় পৌঁছতে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা সময় লাগে। রেলপথটি নারায়ণগঞ্জ সদর, বন্দর ও সোনারগয়ের উপর দিয়ে লাকসাম কর্ডলাইনটি নির্মাণ হলে বর্তমান গতিতে ট্রেন চললেও সময় লাগবে মাত্র ৩ ঘণ্টা। কর্ডলাইনে সর্বোচ্চ ১৬০ কিলোমিটার গতি নিয়ে ট্রেন চলতে পারবে। এতে ২ ঘণ্টারও কম সময় লাগবে।
রেলওয়ে পরিকল্পনা দপ্তর সূত্রে জানা যায়, ১৯৬৯ সালে ঢাকা-লাকসাম কর্ডলাইন নির্মাণে পরিকল্পনা ও সমীক্ষা সম্পন্ন হয়। তখন না হলেও ২০০৬ সালে ঢাকা-লাকসাম কর্ডলাইন নির্মাণ সমীক্ষাসম্পন্ন করে এসএম এএমইসি ইন্টারন্যাশনাল পিটি লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু তখন অজানা কারণে প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যায়। এখন নতুন করে নারায়ণগঞ্জ থেকে লাকসাম পর্যন্ত কর্ড লাইন নির্মাণের প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে। ২০২৩ সালের জুন মাসে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কাল শুরু হয়। শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ২০২৭ সালের ডিসেম্বরে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২১৯১৩৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৩৪০১৮৪ লাখ টাকা দিবে জিওবি। আর ৮৭৮৯৫২ লাখ টাকা দিবে এডিবি।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, হাইস্পিড লাইন নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল সরকারের। কিন্তু হাইস্পিড লাইন রক্ষণাবেক্ষণে অতিরিক্ত ব্যয়, টিকিটের দাম বিমান ভাড়ার কাছাকাছি, হাইস্পিড লাইন প্রকল্পে বড় বিনিয়োগসহ নানা কারণে উদ্যোগটি থেকে পিছিয়েছে।
রেলওয়ে মহাপরিচালক ডিএন মজুমদার জানান, কর্ডলাইন নির্মাণের দিকেই আমরা যাচ্ছি। তার একমাত্র কারণ-ব্যয় কমিয়ে উন্নত সেবা দেওয়া সম্ভব। ভাড়া কমে আসলে সাধারণ যাত্রীরাও ভ্রমণে উৎসাহিত হবেন। তবে কিছু জরাজীর্ণ লাইন মেরামত, অবৈধ লেভেলক্রসিং বন্ধ করতে হবে। মেয়াদোত্তীর্ণ ইঞ্জিন-কোচ পালটানোসহ বন্ধ স্টেশন চালু করতে হবে।