নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান ভূঁইয়ার নির্বাচনী গণসংযোগে এই প্রার্থীর ঘনিষ্ঠ এক অনুসারীকে প্রকাশ্যে টাকা বিলি করতে দেখা গেছে।
টাকা বিলি করা ওই ব্যক্তির নাম নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর ওরফে জাহাঙ্গীর মাস্টার। তিনি রূপগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।
ওই ভিডিওতে দেখা যায়, শাহজাহান ভূঁইয়ার পক্ষে নির্বাচনী গণসংযোগ করছেন ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম। তাঁর পেছনে কর্মী-সমর্থকরা শাহজাহানের নির্বাচনী প্রতীক ‘কেটলি’র পক্ষে স্লোগান দিচ্ছেন। এ সময় নুরুল ইসলামকে টাকা বিলি করতেও দেখা যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২১ ডিসেম্বর সকালে দাউদপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ‘কেটলি’ প্রতীকের প্রচারণায় যান ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর। ওই সময় প্রচারণার ভিডিও ধারণ করে তা নিজের ফেসবুক একাউন্টে পোস্ট করেন শাহজাহান ভূঁইয়ার অনুসারী ছাত্রলীগের নেতা নাসিম মোল্লা। ওই ভিডিওতে নুরুল ইসলামকে প্রকাশ্যে টাকা বিলি করতে দেখা যায়।
এই বিষয়ে জানতে দাউদপুর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টার বলেন, কয়েকদিন আগে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা ও মিটিং করার সময় আমি সহ কর্মীরা চা পান করেন। কিন্তু সেই চায়ের বিল দিতে ভুলে যাই। পরে মনে পড়লে, ওই ব্যক্তিকে চায়ের বিল দিয়েছে।
তবে ‘কেটলি’ প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান ভূঁইয়া বলেন, ‘যে টাকা বিলি করছে, সে আমার কতটুকু কাছের লোক, সে আমার নির্বাচন করে কিনা সেইটা দেখার ব্যাপার আছে। ওই ব্যক্তি আমাকে বিতর্কিত করার জন্য এমনটা করেছেন কিনা সেটাও একটি বিষয়। কারণ টাকা বিলিয়ে নির্বাচন আমি করি না।’
এদিকে, এই বিষয়ে নৌকার প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, ‘ভূমিদস্যুরা যে আমার প্রতিপক্ষ প্রার্থীদের বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে প্রকাশ্যে টাকা বিলির ভিডিও তারই প্রমাণ। এই টাকা বিলি করার মধ্য দিয়ে ওই ভূমিদস্যুরা সুকৌশলে নির্বাচন ও নির্বাচন নিয়ে সরকার ও প্রশাসনের অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন। প্রধানমন্ত্রী রূপগঞ্জবাসীর কল্যাণে আবারও কাজ করার জন্য আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। আমার বিশ্বাস, রূপগঞ্জবাসী আগেও এই ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে যেমন ছিলেন, এবারও তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন। একইসাথে প্রশাসনকে বলবো, যারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য তৎপর তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।’
এ বিষয়ে সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আহসান মাহমুদ রাসেল বলেন, এই বিষয়টি ইতোমধ্যে আমরা জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।