নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীর পক্ষে সমর্থন দেয়ায় জাপান-বাংলাদেশ গ্রুপের চেয়ারম্যান সেলিম প্রধানের বাড়িতে দফায় দফায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও গুলি ছুঁড়েছে। এতে অন্তত ৬ জন নিরাপত্তা কর্মী আহত হয়েছে। সেই সাথে সেলিম প্রধানের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান (জাপান বাংলাদেশ আড়ত) দখল করে ব্যবসায়ীদের মারধর করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৪ মে ) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দফায় দফায় রূপগঞ্জ উপজেলার সাওঘাট এলাকায় সেলিম প্রধানের নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, নিরাপত্তা কর্মী আক্তার হোসেন, ফরহাদ হোসেন, শফিকুল ইসলাম, শিপন হাওলাদার, রানা শেখ ও ফারুখ হোসেন।
হামলার প্রসঙ্গে সেলিম প্রধান বলেন, সকালে বালু হাবিব ( সদ্য নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব) এর নির্দেশে শতাধিক লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেছে। বাড়ির লোকজনদের মারধর করে আহত করেছে। তাদেরকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। তারা ঘোষণা দিয়ে আমাকে মেরে ফেলার জন্য এই হামলা করেছে। সদ্য অনুষ্ঠিত উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচনে বালু হাবিবের (হাবিবুর রহমান হাবিব) প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রানুর পক্ষে সমর্থন দেয়ায় এই হামলা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এমপি সাহেবের পুত্র পাপ্পা গাজীর নির্দেশে বালু হাবিব ও তার লোকজন এই হামলা করার সাহস পেয়েছে।
রাশিয়ান এম্বাসিতে অভিযোগ করবেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার স্ত্রী ও সন্তানরা রাশিয়ার নাগরিক। আমি এই ঘটনায় রাশিয়ান এম্বাসিতে অভিযোগ করবো। এই অবস্থায় আমার স্ত্রী ও সন্তানদের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই আমি এই ঘটনায় থানায় অভিযোগ করবো।
জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সেলিম প্রধানের রাশিয়ান স্ত্রী আনা প্রধান বলেন, আমি ও আমার সন্তানরা নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি। এই ঘটনায় পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে রাশিয়ান এম্বাসিতে অভিযোগ করবো।
বিকেলে হামলা প্রসঙ্গে সেলিম প্রধান বলেন, আমাকে ও আমার পরিবারকে ওরা খুন করতে চায়। তাই এভাবে বার বার হামলা করছে। ৩০ রাউন্ডের অধিক গুলি ছুঁড়েছে। গুলির খোসা অনেক স্থানে পরে আছে। এই ঘটনায় অনেক ভিডিও আমার কাছে আছে, যা প্রমাণ হিসেবে রেখে দিয়েছি।
এ বিষয়ে মন্তব্য নেওয়ার জন্য রূপগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব এর সাথে যোগাযোগ করা পাওয়া যায়নি।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, একটি আড়ৎ এর ব্যবসাকে কেন্দ্র করে সকালে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এরপর থেকে
যথেষ্ট সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বিকেলে হামলার ঘটনা ও গুলি ছোড়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেখানে পুলিশ রয়েছে। তারা বিষয়টি দেখছে।
প্রসঙ্গত, গত ২১ মে অনুষ্ঠিত রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু হোসেন ভূঞা রানু কে সমর্থন দিয়ে প্রকাশ্যে তার পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছিলেন জাপান-বাংলাদেশ গ্রুপের চেয়ারম্যান সেলিম প্রধান। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব বিজয়ী হয়েছেন। নির্বাচনে জয়ের পরে থেকে হাবিবুর রহমানের লোকজন নানা ভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল।