বুধবার (২৬ জুন) বেলা দেড়টায় মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের ফতুল্লা ডিপোর জেটিতে নোঙর করা তেল বোঝাই ওই ট্রলারে আগুন লাগে৷ এসময় তেলের ড্রাম বিস্ফোরণে গোটা এলাকা কেঁপে ওঠে। আশপাশে ছড়িয়ে পরে আতঙ্ক। পরক্ষনেই দেখা যায় নদীতে ট্রলারে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। খবর পেয়ে ডিপোর লোকজন, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লিষ্টরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে।
বিকাল পৌনে ৪টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয়নি বলে নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক ফখরউদ্দিন আহমেদ জানান।
তিনি জানান, আগুনে দগ্ধ হয়ে একজন শ্রমিক মারা গেছেন৷ আগুন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জ্বালানি দাহ্য তেল হওয়াতে আগুন নেভাতে সময় লাগবে৷ আগুন নেভাতে ১০টি ইউনিট কাজ করছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি নূরে আযম বলেন, ‘আগুন লাগার পর বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়৷ এতে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে৷ ট্রলারে থাকা জ্বালানি ভর্তি ড্রাম বিস্ফোরিত হয়েছে বলে আপাতত ধারণা করা হচ্ছে।’
মেঘনা ডিপোর উপমহাব্যবস্থাপক লুৎফর রহমান সাংবাদিকদের জানান, ট্রলারটি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তেল নিতে এখানে আসে। দেড়টার দিকে তেল নেওয়া শেষ হলে সবাই পাইপ তুলে নিয়ে লাঞ্চের জন্য চলে যায়। এমন সময় জেটি থেকে ২০-৫০ ফিট দুরে যেতেই ট্রলারে আগুন ধরে যায়। সেখানে লোক ছিলো ৫জন। আমাদের ডিপোতে যথেষ্ট পরিমানে ফায়ার ফাইটিং সামগ্রী আছে, আমরা তৎক্ষনাত আগুন নেভানোর কাজ শুরু করি এবং ফায়ার সার্ভিস ও নৌ-পুলিশকে খবর দেই। আমার জানা মতে, একজন নিহত, একজন আহত এবং তিজন নিখোঁজ রয়েছে।
ঘটনাস্থলে আসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দিদারুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় আমরা ডিপোর সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা যতটুকু জেনেছি ট্রলারটিতে ডিজেল ও পেট্রোল লোড করা ছিল। এসময় তেলের ড্রামবাহী ট্রলারে ৪ জন শ্রমিক রান্না করছিল বলে শুনেছি। হয়ত সেখানে থেকে এ ঘটনা ঘটতে পারে। একজনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে, বাকি ৩ জনের ব্যাপারে এখনো জানি না।
এদিকে ডিপো সংশ্লিষ্টরা জানান, দুর্ঘটনার কবলে পরা ট্রলারটির নামে এম.ভি মনপুরা। আজ এই ট্রলারটি নিয়ে পাঁচ জন নারায়ণগঞ্জ মেঘনা ডিপোতে আসে। তারা হলেন- বাকের মাঝি, খায়রুল মিস্ত্রি, বাবুল মোল্লা, খোকন ও কামাল। এদের মধ্যে আহত অবস্থায় কামালকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এছাড়া আরেক কর্মচারি বাকের মাঝি নিরাপদে সরে আসতে পারলেও এখনো নিখোঁজ রয়েছে বাকি তিন জন। যদিও ট্রলারের আগুন নিয়ন্ত্রনে আনার পর একটি লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা। তবে, এখনো ওই লাশের কোন পরিচয় শনাক্ত করা হয়নি।