বন্দরে একটি কার্টন তৈরির প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাকর্মীদের হাত-পা বেঁধে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ফিল্মি স্টাইলে মালামাল লুট করে নিয়ে যায় এক দল ডাকাত। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে উপজেলার লক্ষণখোলা মাদরাসা সংলগ্ন এলাকায় আয়শা ইপিএস ইনসুলেশন লিমিটেড প্রতিষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ২৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কামাল হোসেন।
এই ঘটনার একটি সিসি টিভি ফুটেজ ইতোমধ্যে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে এসে পৌঁছেছে।সিসি টিভি ফুটেজে দেখা যায়, কয়েকজন ব্যক্তি মধ্যরাতে প্রতিষ্ঠানের ভেতরে প্রবেশ করে প্রথমে নিরাপত্তাকর্মীদের কক্ষে প্রবেশ করে। পরে সেখান থেকে বের হয়ে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন মালামাল, তার সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র একটি পিকআ্প ভ্যানে করে নিয়ে যায়।
ভুক্তভোগি ও আহত দুজন নিরাপত্তা কর্মী হলেন- মো. আফিজ মিয়া ও ইউসুফ আলী।
প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা কর্মী মো. আফিজ মিয়া বলেন, তিনজন ডাকাত এসে প্রথমে আমাদের দুজনের হাত-পা বেঁধে ফেলে। এ সময় আমরা চিৎকার দেওয়ার চেষ্টা করলে তারা আমাদের গলায় ধারালো ছুরি ধরে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। পরে আরও কয়েকজন ডাকাত সদস্য এসে চাবি দিয়ে অন্য কক্ষের তালা খুলে বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে গেছে। যাওয়ার সময় শুধু পিক আপ ভ্যানে করে কিছু একটা নিতে দেখেছি। এর বেশি কিছু বলতে পারিনা। পরে সকালে মসজিদের ইমামের কাছ থেকে খবর পেয়ে প্রতিষ্ঠানের মালিক আমাদের উদ্ধার করেছে। তবে ডাকাতদের মুখ মাস্ক ও কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিল। এ কারণে তাদের কাউকে চিনতে পারিনি।
আরেক নিরাপত্তাকর্মী ইউসুফ আলী বলেন, রাত আড়াইটার দিকে ডাকাতরা এসে আমাদের হাত-পা বেঁধে ফেলে ও মারধর করে গেটের ও বিভিন্ন কক্ষের চাবি নিয়ে নেয়। পরে পিকআপ ভ্যানে করে তারা বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে যায়।
আয়শা ইপিএস ইনসুলেশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কামাল হোসেন বলেন, ভোরে স্থানীয় মেম্বার মোতালেব আমাকে ফোন করে ডাকাতির বিষয়টি জানায়। খবর পেয়ে দ্রুত প্রতিষ্ঠানে চলে আসি। এখানে এসে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় নিরাপত্তাকর্মী দুজনকে দেখতে পেয়ে তাদের উদ্ধার করি। এ সময় প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কক্ষ ঘুরে দেখতে পাই, প্রতিষ্ঠানের কার্টন তৈরির বিভিন্ন মেশিন, তার, কাঁচামাল সহ নগদ টাকা খোয়া গেছে। পরে সিসি টিভি ফুটেজ চেক করে দেখি, ১০-১২ জনের একটি ডাকাত দল বাউন্ডারির টিন কেটে প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে নিরাপত্তাকর্মীদের জিম্মি করে মালামাল ডাকাতি করে নিয়ে যায়। এতে আমার প্রায় ২০-২৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে।পুলিশ এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এই ঘটনায় মামলা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এই ঘটনায় মামলা হবে। আমি যতদূর জানতে পেরেছি এটা চুরির ঘটনা। এরপরও তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।