নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার মেঘনা পেট্রোলিয়ামের ডিপো থেকে জ্বালানী তেলবোঝাই ট্রলার বরিশাল যাওয়ার পথে বুড়িগঙ্গা নদীতে বিস্ফোরণ এবং ভয়াবহ অগ্নিকা-ের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। এদিকে বিকেলে নিয়ন্ত্রণে আসার পর রাতে ফের অগ্নিকান্ড হওয়ায় ট্রলারটি নদীতে ডুবিয়ে দিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এদিকে খোলা নৌযানে সরকারী ডিপো থেকে তেল বিক্রির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুরে জেলা প্রশাসক বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। মেঘনা পেট্রোলিয়াম এভাবে খোলা ট্রলারে ড্রামে করে জ্বালানী তেল বিক্রি করতে পারে কিনা এনিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্তের জন্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সাকিব আল রাব্বিকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। বিস্ফোরণ ও অগ্নিকান্ডের ঘটনায় কারও গাফিলতি বা দায় থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপ সহকারী পরিচালক মোঃ ফখরউদ্দিন জানান, বুধবার দুপুরে ট্রলারটিতে আগুন লাগার পর বিকেল ৩টায় আগুন অনেকটা নিয়ন্ত্রনে আনলেও, সন্ধ্যা ৭টার দিকে তা পুনরায় জ্বলে উঠে। রাত ৯টার দিকে আগুন লাগা ট্রলারটি বুড়িগঙ্গা নদীতে ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরআগে ট্রলারটি বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে রাখা অবস্থায় এতে আবার আগুন ধরে যায়। এরপর সন্ধ্যা পৌনে ৭ টায় আবারো ভয়াবহ আগুন লাগে ট্রলারটিতে। ট্রলারের ভেতরে থাকা তেল থেকে এ অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটছে ধারণা ফায়ার সার্ভিসের। একপর্যায়ে ট্রলারটির রশি পুড়ে গিয়ে মাঝনদীতে চলে গিয়েছিল। এ কারণে আগুন নেভানো শেষে ট্রলারটিকে নদীতে ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে আগুন নিয়ন্ত্রণের পর ট্রলার থেকে এক শ্রমিকের পুড়ে যাওয়া মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। আরেক শ্রমিককে ঘটনার পর পরই ঢাকায় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায়, ওই ট্রলারের চার শ্রমিকের মধ্যে একজন নদীর পাড়ে উঠতে পারলেও বাকিরা নিখোঁজ ছিলেন। এর মধ্যে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
মেঘনা ডিপোর ইনচার্জ জিয়াউর রহমান জানান, ট্রলারে করে তেল নিয়ে তারা বরিশাল মনপুরায় যাচ্ছিলেন। ট্রলারে চারজন শ্রমিক ছিলেন। তারা ভেতরে রান্না করছিলেন। এ সময় সেখান থেকে হয়ত আগুন লাগতে পারে। ট্রলারটিতে ৮৬ ড্রাম পেট্রোল ও ৭০ ড্রাম ডিজেল ছিল। প্রায় সব তেলবাহী ড্রাম অগ্নিকা-ে বিস্ফোরিত হয়।