সভা সমাবেশ নিষেধাজ্ঞাকে সংবিধান লঙ্ঘন উল্লেখ করে তা প্রত্যাহার, সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়ার দাবিতে নারায়ণগঞ্জে মুখে কালো কাপড় বেঁধে মানববন্ধন ও মিছিল করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট।
শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) সকাল ১১ টায় দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসাবে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও শহরে মিছিল করে বাম জোটের নেতাকর্মীরা।
বাম গণতান্ত্রিক জোট নারায়ণগঞ্জ জেলার নেতা ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক শিবনাথ চক্রবত্তীর সভাপতিত্তে¡ মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা এডভোকেট মন্টু ঘোষ, বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সদস্যসচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব, বাসদ নেতা সেলিম মাহমুদ, এস এম কাদির, সিপিবি নেতা বিমল কান্তি দাস, ইকবাল হোসেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, আওয়ামী সরকার চরম ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করেছে। বিরোধী নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার, হামলা, মামলা দিয়ে দেশে একটি ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করেছে। নির্বাচন কমিশনসহ সকল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয় প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করেছে বর্তমান। জনমত উপেক্ষা করে সরকারের তল্পিবাহক নির্বাচন কমিশন একতরফা নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করেছে। নির্বাচনে দেশে ক্রিয়াশীল প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো অংশ নেয়নি। সারাদেশে প্রহসনের নির্বাচনের বিরুদ্ধে তীব্র গণবিক্ষোভ গড়ে উঠেছে। নির্বাচন কমিশন নজীরবিহীনভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে সভাসমাবেশ বন্ধে চিঠি দিয়েছে এবং পুলিশ প্রশাসন সারাদেশে সমাবেশ বন্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে নির্দেশনা পাঠিয়েছে। সংবিধানে নাগরিকের সভাসমাবেশ করার অধিকার নিশ্চিত করেছে। বাস্তবে সরকার অঘোষিতভাবে জরুরি আইন জারি করেছে। বিরোধী আন্দোলন দমন করেই সরকার নির্বাচন শেষ করতে চায়। প্রতিদ্ব›দ্বী দলসমূহ নির্বাচনে না যাওয়ায় এবারের নির্বাচন সরকারের সুবিধাভোগী কিছু দলের ভাগাভাগির নির্বাচনে পরিনত হয়েছে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, স্বাধীনতার পর দেশে ১১ টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্যে ৭ টি দলীয় ও ৪ টি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ৪ টি নির্বাচনে মানুষ তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পেরেছে। দলীয় সরকারের অধীনে প্রত্যেকটি নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ কারচুপীর নির্বাচন হয়েছে। গত দুটি নির্বাচনে ভোটারবিহীন ও দিনের ভোট রাতে করে আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে তাদের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার জানে সুষ্ঠু নির্বাচনে তার পরাজয় অবশ্যম্ভাবী। সেজন্য তারা দলীয় সরকারের অধীনে একতরফা নির্বাচন করতে চাচ্ছে এবং এইভাবেই সমস্ত আয়োজন করছে। বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করা, একতরফা তফসিল বাতিল করে নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন করা এখন দেশের জনগনের দাবি। সরকার একতরফা নির্বাচনের কার্যক্রম পরিচালনা করে দেশকে সংঘাতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।