ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি মানবজীবন হুমকির সম্মুখিন হয়ে পড়েছে। পরিবেশ দূষণের বিষয়ে কোন রকম তোয়াক্কা না করে আইন অমান্য করে অনেক ইটভাটা অবৈধভাবে পরিচালনা করে আসছে। এর ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জ জেলায় একে পর এক অভিযান পরিচালনা করে ইটভাটার বিরুদ্ধে নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এমনকি অনেক ইটভাটা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, আবার কোন কোন ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জে ২৪৪টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে ১২০টির অধিক অবৈধ ইটভাটা আদালতে রিট মামলা পরিচালনা করে কার্যক্রম চালু রেখেছে। এছাড়া যেসব ইটভাটার পরিবেশগত ছাড়পত্র ও ইট পোড়ানোর লাইসেন্স উভয় নেই, এরুপ ৪২টি ইটভাটাকে অবৈধ চিহ্নিত করে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ফতুল্লায় ১২টি ইটভাটাকে ৮১ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সেখানে বেশ কয়েকটি ইটভাটাকে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বন্দর উপজেলায় ১৫টি ইটভাটাকে ৫৪ লাখ টাকা জমিমানা করা হয়েছে। সেই সাথে এসব ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি ইটভাটার বিভিন্ন স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ জেলার সহকারী পরিচালক শেখ মুজাহিদ।
গত বুধবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলার কেওঢালা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৫ টি ইটভাটা কে ৫৪ লাখ টাকা জরিমানা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র সহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় এসব ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া তিনটি ইটভাটার বিভিন্ন স্থাপনা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
জরিমানা করা ইটভাটা গুলো হলো -মেসার্স আওলাদ ব্রিকস , মেসার্স রূপা ব্রিকস ও আনন্দ ব্রিকস অ্যান্ড কোং কে ৬ লাখ এবং আল মদিনা ব্রিকস (বি আর বি), মেসার্স আল্লাহ ভরসা ব্রিকস, মেসার্স আল্লাহ মহান ব্রিকস, মেসার্স ভূইয়া ব্রিকস, মেসার্স নেশনাল ব্রিকস, মেসার্স দেওয়ান ব্রিকস অ্যান্ড কোং, মেসার্স আল্লাহর দান ব্রিকস, মেসার্স খান ব্রিকস, মেসার্স এস কে বি, মেসার্স সোনারগাঁ টাটা ব্রিকস, মেসার্স সেভেন জিরো সেভেন, মেসার্স টু এস বি ব্রিকস কে ৩ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র সহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় এসব ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া মেসার্স আওলাদ ব্রিকস , মেসার্স রূপা ব্রিকস ও আনন্দ ব্রিকস অ্যান্ড কোং এর চুল্লি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
অভিযান পরিচালনাকালে পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তামজীদ আহমেদ বলেন, পবিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, ইট পোড়ানোর লাইসেন্স, মাটি ব্যাবহারের জন্য জেলা প্রশাসকের ছাড়পত্র না থাকায় এসব ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ৫৪ লাখ টাকা জরিমানা সহ সবগুলো ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে।
এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি ফতুল্লার বক্তাবলীতে অভিযান চালিয়ে ১২ টি ইটভাটাকে ৮১ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়। সেই সাথে একটি ইটভাটা ধ্বংস সহ তিনটি ইটভাটা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। অভিযানের নেতৃত্ব দেন পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজী তানজীদ আহাম্মেদ।
জরিমানা করা ইটভাটা গুলো হলো- মেসার্স সেলিম ব্রিক্স, মেসার্স বন্ধু বিক্স, মেসাস নিউ ব্রিক সান, জমজম ব্রিক্স, ধলেশ্বরী ব্রিক্স, চার চরহবিল ব্রিক্স, তৈয়ব ব্রিকস, নূরে মদিনা ব্রিকস, মহব্বত আলী ব্রিকস, নিউ নূর ব্রিকস ও রাকিব ব্রিকস।
পরিবেশ অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ জেলার সহকারী পরিচালক শেখ মুজাহিদ বলেন, ‘পরিবেশ মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে ১০১ দিনের কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। যেখানে অবৈধ ভাটাসহ কলকারখানার মাধ্যমে বায়ুসহ পরিবেশ দূষন হচ্ছে সেখানে এ অভিযান চলবে। এ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ জেলায় দুই দফায় অভিযান পরিচালনা করে যথাক্রমে ১২ ও ১৫ টি ইটভাটার কে জরিমানা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জে ২৪৪টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে ১২০টির অধিক অবৈধ ইটভাটা আদালতে রিট মামলা পরিচালনা করে কার্যক্রম চালু রেখেছে। এছাড়া যেসব ইটভাটার পরিবেশগত ছাড়পত্র ও ইট পোড়ানোর লাইসেন্স উভয় নেই, এরুপ ৪২টি ইটভাটাকে অবৈধ চিহ্নিত করে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ফতুল্লায় ১২টি ইটভাটাকে ৮১ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সেখানে বেশ কয়েকটি ইটভাটাকে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বন্দর উপজেলায় ১৫টি ইটভাটাকে ৫৪ লাখ টাকা জমিমানা করা হয়েছে। সেই সাথে এসব ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি ইটভাটার বিভিন্ন স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।