নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মান্নান (৭০) নামের বৃদ্ধ শ্বশুরকে কুপিয়ে জখম করেছেন তার পুত্রবধূ। বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারী) সন্ধ্যায় শ্বশুরকে একা পেয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে ছেলের বউ পালিয়ে যায়।
আহত শ্বশুরকে উদ্ধার করে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান স্বজনরা। খবর পেয়ে সোনারগাঁ থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, সোনারগাঁ পৌরসভার হাতকোপা গ্রামের বৃদ্ধ মান্নান গত ৮ মাস আগে একটি এনজিও থেকে ১০ লাখ টাকা ঋণ তোলেন। ঋণ নেওয়ার সময় ঋণের সদস্য হন তার বড় ছেলের স্ত্রী চামেলী আক্তার (৩৫)। ঋণের টাকার চেক পেয়ে মান্নান সরল বিশ্বাসে তার ছেলের বউ চামেলী আক্তারের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা দেন। কিছুদিন পর মান্নান জানতে পারেন তার পুত্রবধূ চামেলী আক্তার তার অ্যাকাউন্ট থেকে ২ লাখ টাকা তুলে খরচ করে ফেলেছেন।
এরপর মান্নান তার ছেলের বউ চামেলী আক্তারের কাছে টাকা চাইলে জানতে পারেন বৃদ্ধ মান্নানকে না জানিয়ে চামেলী ২ লাখ টাকা তুলে খরচ করে ফেলেছেন।
এ সময় বৃদ্ধ মান্নান তার পুত্রবধূর অ্যাকাউন্টে থাকা বাকি টাকা ফেরত চাইলে তা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এ ঘটনার পর থেকে মান্নানের সঙ্গে তার পুত্রবধূর দ্বন্দ্ব শুরু হয়। পরে মান্নান ঋণ নেওয়া এনজিওতে গিয়ে তার ঋণের টাকা থেকে যেন আর কেউ টাকা তুলে না পারে সেজন্য একটি আবেদন করেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এনজিওর কর্মকর্তারা পুলিশের সহায়তায় চামেলীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করেন।
অবশেষে বৃদ্ধ মান্নান নিজে দুই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে এনজিওর ১০ লাখ টাকা ফেরত দিয়ে পুত্রবধূ চামেলীকে ৬ মাস আগে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চামেলী আক্তার বুধবার সন্ধ্যায় বাড়িতে এসে বৃদ্ধ মান্নানকে একা পেয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
এ সময় চিৎকারের শব্দে আশপাশের লোকজন মান্নানকে উদ্ধার করে সোনারগাঁ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
সোনারগাঁ থানার এসআই পঙ্কজ জানান, এ ব্যাপারে থানায় এখনো কেউ কোনো অভিযোগ দায়ের করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।