আইন সংশোধন করে ২০১৫ সালে দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনব্যবস্থা চালু করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার। এরপর দুই দফায় ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হয়েছে। তবে এবার নিজেদের সেই সিদ্ধান্ত বদলে প্রতীক ছাড়া নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। সোমবার দলটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় গণভবনে শুরু হওয়া ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলের কেন্দ্রীয় নেতারা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রসঙ্গে আলোচনা তুললে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, উপজেলা পরিষদের আসন্ন নির্বাচনে কাউকেই দলীয় প্রতীক দেবে না আওয়ামী লীগ। এ ছাড়া ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় সরকারের আর কোনো নির্বাচনেই দলটি দলীয় প্রতীক ব্যবহার করবে না বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। দলীয় প্রতীকে নির্বাচনী আইন করে তৃণমূলে সাংগঠনিকভাবে দল দুর্বল হয়েছে বলে কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে অংশ নেওয়া কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের একাধিক নেতা এসব তথ্য জানিয়েছেন।
তারা আরও জানান, দলের এ সিদ্ধান্ত নির্বাচন পরিচালনা কমিটিকে জানিয়ে দেওয়া হবে। এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর দলের সভাপতি শেখ হাসিনা স্বস্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে বলেন, ‘মনোনয়ন বোর্ডে যে সময় ব্যয় হয়, সে সময়টা আমি এখন রাষ্ট্রীয় কাজে দিতে পারব।’
বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক নেতা জানান, কোন্দল ও সহিংসতা ঠেকাতে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না দেওয়ার মত দেন অধিকাংশ নেতা। তারা বলেন, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পাশাপাশি আওয়ামী লীগ থেকেই বহু স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকায় তৃণমূলে সাংগঠনিক বিভেদ তৈরি হয়েছে। এখন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে প্রার্থী মনোনয়ন দিলে অন্যরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট করবেন। এতে বিভেদ আরও বাড়বে। বরং সবার জন্য প্রার্থিতা উন্মুক্ত করে দেওয়াই উত্তম হবে। জবাবে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘মার্কা না দিলেই যে গণ্ডগোল হবে না, তা নয়। দেখ তোমরা কী করবা। মার্কা দিও না। আমি মনোনয়ন দেব না, আমারও ঝামেলা কমে গেল।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপাতত স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে দলীয়ভাবে কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না। এতে ভোট উৎসবমুখর ও অংশগ্রহণমূলক হবে। যিনি জনপ্রিয় প্রার্থী তিনিই জয়ী হয়ে আসবেন। বিষয়টি দলের মনোনয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হবে।’