সোনারগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাছবাহী পিকআপভ্যান থেকে বিপুল পরিমাণ মাদকসহ দুই চোরাকারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
র্যাব বলছে, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন কৌশলে মাদক এনে স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের দিয়ে বিক্রি করছে।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অভিযান চালিয়ে মাছের আড়ালে বহন করা ১০০ কেজি গাঁজাসহ একটি পিকআপভ্যান জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- চক্রের মূলহোতা মো. মহসিন (৪০) ও তার সহযোগী পিন্টু চন্দ্র সরকার (২৪)।
মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর টিকাটুলিতে র্যাব-৩ এর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও থানার মেঘনা এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অস্থায়ী চেকপোস্ট বসিয়ে পিকআপভ্যানের পানির ট্যাংকিতে অভিনব কায়দায় লুকিয়ে মাদক পরিবহনের অভিযোগে ১০০ কেজি গাঁজাসহ দুই চোরাকারবারিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মহিউদ্দিন বলেন, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে দেশের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে মাদক আনত। এরপর সেগুলো রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করত।
গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক বলেন, পিকআপভ্যানে মাছ পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত প্লাস্টিকের ড্রামের ভেতরে মাদক পরিবহন করে। পিকআপে মাছ থাকার তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করত। চেকপোস্টে তাদের গাড়ি থামালে তারা বলত, কুমিল্লার চান্দিনা থেকে মাছ লোড করে যাত্রাবাড়ী মাছের আড়তে যাচ্ছে। পিকআপে মাছের ড্রামে গাঁজা লুকিয়ে রাখায় তারা নিশ্চিত ছিল যে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তল্লাশিতে মাদকের সন্ধান পাওয়া যাবে না। এভাবে তারা মাদক এনে কারবারিদের কাছে সরবরাহ করত। এরপর সেগুলো কিশোর গ্যাংসহ বিভিন্নভাবে বিক্রি করত।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দিন বলেন, মাদক সিন্ডিকেটের মূলহোতা হলো মহসিন এবং তার অন্যতম সহযোগী পিন্টু। কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকার আরও কয়েকজন মাদক কারবারী এই চক্রে জড়িত রয়েছে। তারা অল্প পরিশ্রমে অধিক অর্থ উপার্জনের লোভে মহসিনের পরিকল্পনায় মাদক সিন্ডিকেটটি গড়ে তোলে। তারা একেক সময় একেক ধরনের কৌশল অবলম্বন করত। তারা কখনও ভুয়া নাম পরিচয় ব্যবহার করে, কখনও মাইক্রোবাস/প্রাইভেটকারে যাত্রী পরিবহনের নামে কিংবা যাত্রীবাহী বাসযোগে মাদকের বড় চালান নিয়ে আসত।
গ্রেপ্তারকৃত মহসিনের বিরুদ্ধে মাদক মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। ২০২২ সালের ৩ নভেম্বর রাজধানীর হাতিরঝিল থেকে মাদকসহ গ্রেফতার হয়। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে চাঁদপুর মডেল থানায় আরেকটি মাদক মামলা রয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত পিন্টুর পেশা মূলত কাঠমিস্ত্রি। মহসিন এবং পিন্টুর বাড়ি একই এলাকায় হওয়ায় মাদক সেবনের মাধ্যমে তাদের মধ্যে সখ্যতা গড়ে উঠে। পরবর্তীতে মহসিনের দেখানো প্রলোভনে পিন্টু মাদক ব্যবসায় নামে। গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।