নারায়ণগঞ্জ শহরের চানমারী থেকে অপহৃত তিন বছরের শিশু আব্দুর রহমানকে জামালপুরের মেলাহন্দ থেকে উদ্ধার করেছে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। এ ঘটনায় এক নারীসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (১১ মে) গ্রেফতারকৃতদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মমতাজ বেগম (৫৬) ও তার পূর্বের স্বামী জামালপুর জেলার মেলাহন্দ থানার কাউয়া বাড়ির মো. হাবিবুর রহমানের ছেলে ফজলু (৪৬)। শুক্রবার (১০ মে) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে তাদের জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার চৌধুরী বাড়ি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরআগে বুধবার রাতে অপহৃত শিশু আব্দুর রহমানকে জামলালপুর জেলা মেলাহন্দ থানা পুলিশের সহায়তায় থানা সীমান্তের কাউটা বাইদ এলাকাস্থ ধানক্ষেতের পাশ থেকে উদ্ধার করে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ।
অপহৃত শিশুটির বাবা রবিন (২৭) বাদী হয়ে তার সৎ মা মমতাজ বেগম (৫৬) সহ অজ্ঞাত নামা আরো ২-৩ জন কে আসামী করে বুধবার দুপুরে ফতুল্লা মডেল মামলা দায়ের করেন।
অপহৃত শিশুটির বাবা ও মামলার বাদী রবিন মিয়া জানায়, তার বাবা ছয় মাস পূর্বে মামলার এজাহারনামীয় আসামী মমতাজ বেগম কে বিয়ে করে। তার সৎ মা শিশু সন্তানটিকে আদর করতেন। সে শহরের কালিবাজরস্থ একটি মাংসের দোকানে এবং তার স্ত্রী একটি গার্মেন্টেসে কাজ করে চানমারিস্থ আয়েশা বেগমের বাড়ীতে ভাড়ায় বসবাস করতো। এবং তার সৎ মা একই এলাকার দুলু মিয়ার বাসায় ভাড়ায় বসবাস করে আসছিলো। তারা স্বামী স্ত্রী উভয়েই সকালে নিজ নিক কর্মস্থলে চলে গেলে শিশুটিকে বাদীর সৎ মায়ের নিকট রেখে যায়।
৪-৫ দিন পূর্বে তার বাবার সাথে সৎ মায়ের ঝগড়া ও মন মালিন্য হয়। ধারনা করা হয় তার বাবার উপর অভিমান করে সৎ মা শিশুটিকে অপহরন করে নিয়ে যায়। তিনি আরো জানান, মঙ্গলবার (৭ মে) সকালে তারা স্বামী স্ত্রী উভয়েই নিজ নিজ কমস্থলে চলে গেলে শিশুটিকে প্রতিদিনের ন্যায় তার সৎ মায়ের নিকট রেখে যায়। পরে বেলা ১২ টার দিকে রবিনের বাবা তার স্ত্রী আখিকে জানায়, শিশু সহ তার বাদীর সৎ মা সকাল নয়টার সময় বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। তখন বাদী তার সৎ মায়ের নাম্বারে ফোন করলে তা রিসিভ করছিলোনা। এক পর্যায়ে বাদীর সৎ মা বাদীকে ফোন করে ফোন করে ১০ লাখ টাকা দাবী করে অন্যথায় শিশুটিকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পাচার করে দিবে বলে জানিয়ে দেয়।
এ বিষয়ে নারায়নগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক অঞ্চল) এস, এম জহিরুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার রাতে আমরা একটি অভিযোগ পাই। এ বিষয়ে তদন্ত করতে গিয়ে আমরা জানতে পারি শিশুটির সৎ দাদী তাকে অপহরন করে নিয়ে গেছে। পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে জামালপুর থানা পুলিশের সহায়তায় বুধবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে জামালপুর থেকে আমরা শিশুটিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হই। ১০ লাখ টাকা মুক্তিপনের দাবীতে শিশুটিকে অপহরন করলেও শিশুটিকে ভারতে পাচার করে দিতো। উদ্ধার হওয়া শিশুটিকে তার বাবা মায়ের নিকট ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।