নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মাদক কারবারি ও ভূমিদস্যু মোশাররফকে আগ্নেয়াস্ত্র সহ গ্রেফতার করেছে র্যাব। এছাড়া স্থানীয় কয়েকটি কিশোর গ্যাংয়ের আশ্রয়দাতা হিসেবে তিনি পরিচিত। এছাড়া তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে।
শুক্রবার ভুলতা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব। এ সময় বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন, গুলি, দুটি মোবাইলফোন ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর টিকাটুলিতে র্যাব-৩ এর সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৩ অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ এ তথ্য জানান।
আরো পড়ুন: পাওনা টাকা চাওয়ায় ফারুকের চোখ উপড়ে হত্যা, গ্রেফতার ৫
তিনি বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ জেলার ভুলতা ইউনিয়নের অন্তর্গত টেলাপাড়া এলাকায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর অভিযান চালিয়ে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করে র্যাব। অভিযানের খবর পেয়ে শীর্ষ সন্ত্রাসী মোশাররফের নেতৃত্বে ২০০ থেকে ২৫০ ব্যক্তি দলবদ্ধ হয়ে আগ্নেয়াস্ত্র, দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, লাঠিসোটা ও ইট-পাটকেল নিয়ে হামলা করে আসামিকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এতে র্যাবের কয়েকজন সদস্য আহত হন। এই ঘটনায় ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতপরিচয় শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে রূপগঞ্জ থানায় মামলা করা হয়।’
র্যাব-৩ এর অধিনায়ক বলেন, ‘মোশাররফের বিরুদ্ধে ভুলতা এলাকায় ভূমি দখল, ফুটপাতে চাঁদাবাজি, বালু উত্তোলন নিয়ে প্রভাব বিস্তার ও দখলদারত্ব, অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় এবং আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পেশীশক্তি জানান দেওয়ার জন্য অস্ত্র সরবরাহ করার একাধিক সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও মোশাররফ স্থানীয় কয়েকটি কিশোর গ্যাং দলের নেতৃত্ব দেন বলে তথ্য মিলেছে।’
লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আরও বলেন, ‘গত বছরের সেপ্টেম্বরে র্যাবের কাছ থেকে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন মোশাররফ। এছাড়াও তিনি ভুলতা এলাকায় বালু উত্তোলন এবং ভূমি দখল, বিভিন্ন সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার করেন। তার আধিপত্য বিস্তারে অস্ত্রের ঝনঝনানিতে এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করে। অস্ত্রের মুখে এসব সন্ত্রাসী গ্রুপের কাছে সাধারণ মানুষ জিম্মি হয়ে আছে। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে নির্যাতনসহ প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়।’
আরো পড়ুন: রূপগঞ্জে পিটিয়ে স্ত্রীকে হত্যা, স্বামী পলাতক
গ্রেফতার মোশাররফের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানায় একটি অপহরণ, একটি সরকারি কাজে বাধা দেওয়া এবং আসামি ছিনতাইয়ের মামলা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
র্যাব-৩ এর অধিনায়ক আরও বলেন, ‘মোশাররফ নারায়ণগঞ্জের উত্তর ভুলতা এলাকার মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে। চার ভাই-বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। ছোটবেলা থেকেই বেপরোয়া জীবনযাপন করতেন। দশম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। এরপর একসময় গরুর খামার গড়ে তোলেন। ওই গরুর খামারের আড়ালে ফেনসিডিলের কারবার করতেন। তার নেতৃত্বে কয়েকজন সন্ত্রাসী ভুলতা এলাকায় মারামারি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করতেন। এসব কাজের মাধ্যমে ধীরে ধীরে তিনি এলাকার সাধারণ মানুষের কাছে মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে ওঠেন।’