রাশিয়া-ইউক্রেনে যুদ্ধ, ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের হামলা; এগুলোর কারণে কাছে টাকা থাকার পরও খাবার পাওয়া যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান ।
তাঁর ভাষ্য, ‘পৃথিবীর বড় বড় শক্তি ষড়যন্ত্র করছে। এবার বাংলাদেশের মানুষকে না খাইয়ে মারার ষড়যন্ত্র হবে।’
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের নম পার্কে বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে ফতুল্লায় নির্বাচনী পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
আরো পড়ুন: ক্ষমা চাইলেন শামীম ওসমান, বললেন ‘‘তিনটি লক্ষ্যের কথা”
শামীম ওসমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী ছয় মাস আগের থেকে বলেছেন, এক ইঞ্চি জায়গাও ফেলে রাখবেন না। তিনি জানেন ক্রাইসিস (সংকট) আসছে। এই ক্রাইসিসে আমাদের ১৯৭৪ সালে ফেলা হয়েছিল। খাদ্যভর্তি জাহাজ ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে ভোটের হার কম হওয়ার কারণ জানিয়ে তিনি বলেন, কিছু জায়গায় পুলিশ, কিছু জায়গায় জুডিশিয়াল টিম, কিছু জায়গায় প্রিজাডিং অফিসার, আবার কিছু জায়গায় সকলে মিলেই চেষ্টা করেছে। আমাদের কম করে হলেও ২৫ থেকে ৩০ হাজার ভোট নষ্ট করা হয়েছে।পরে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও পুলিশ সুপারকে জানিয়েছি। এছাড়া নির্বাচনের পূর্বে বড় ছুটি পাওয়ায় অনেক ভোটার গ্রামে চলে গেছে। পাশাপাশি বিএনপি ও জামায়েত ভোটারদের কেন্দ্রে গেলে লাশ হয়ে ফিতারও হুমকি দিয়েছে।
ভৌগোলিকভাবে অনেক কিছু ঘটছে জানিয়ে শামীম ওসমান বলেন, মিয়ানমারে বিদ্রোহীরা আমাদের বর্ডারে যেখান দিয়ে রোহিঙ্গা ঢুকে তা দখলে নিয়ে নিয়েছে। এর চেয়ে বেশি খোলামেলাভাবে বলতে পারবো না। আমরা একটা ক্রাইসিসে পড়তে যাচ্ছি। যা হবে দেখা যাবে, আমরা হারবো না। শেখ হাসিনার ওপর আমাদের ভরসা আছে।
শামীম ওসমান বলেন, নারায়ণগঞ্জে এমন কোনো এলাকা নেই যেখানে মাদক বিক্রি হয় না। মাদক থেকে আসে সন্ত্রাস, কিশোর গ্যাং। গতকাল মাসদাইরে একজনের মাথায় কোপ দিয়েছে কিশোর গ্যাং। সেখানে আমাদের এত বড় বড় নেতা থাকা সত্বেও। তারা তো সেলার। ডিলার কে, হয়তো আমার সঙ্গে বসে আছে। আমার ত্যাগী নেতাদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে সামনে চলে আসে। আমার জন্য দোয়া করবেন, আমাকে একটু সাহায্য করুন। আমি আওয়ামী লীগ, বিএনপি, হেফাজত, জাতীয় পার্টি বুঝি না। আমরা সর্বস্তরের মানুষকে নিয়ে একটি সংগঠন করছি। নারায়ণগঞ্জের মানুষের প্রত্যাশা নিয়ে এই সংগঠনের নাম হবে ‘প্রত্যাশা’। আপনারা শুধু মানুষকে নিয়ে আসবেন। মানুষ আসবে, আপনারা ফরম ফিলআপ করে দেবেন। ক্ষমতায় কুলালে ওষুধও কিনে দেব। অনেকের টাকার অভাবে লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করবো তার লেখাপড়া চালু রাখার। রাজনীতিতে ধান্ধা করতে আসিনি। ধান্ধা করলে ২০২৩ সালে বাড়ি বন্ধক রাখতে হতো না। কোনো খারাপ লোককে আমি আমার সঙ্গে রাখবো না। সে যেই হোক। আমি আপনাদের কাছে ঋণী হয়ে আছি।
আরো পড়ুন: আমরা জাষ্ট নারায়ণগঞ্জকে সুন্দর করতে চাই: শামীম ওসমান
তিনি আরও বলেন, আপনার এলাকার ভালো মানুষগুলোকে নিয়ে আসবেন। ইমাম, শিক্ষকদের নিয়ে আসবেন৷ অন্য দল করে করুক৷ সবাইকে ২৭ তারিখ এ কে এম শামসুজ্জোহা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে নিয়ে আসবেন। পুলিশের একার পক্ষে সম্ভব না মাদক নিয়ন্ত্রণ করা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. আবু হাসনাত শহীদ মো. বাদল, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম. শওকত আলী. নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনু।