ফতুল্লায় গৃহবধূ জেসমিন বেগম(৩৫) হত্যার ঘটনায় রক্তমাখা ছুরি সহ স্বামী আলী হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারী) দিবাগত রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে, রবিবার দিবাগত রাতে ফতুল্লা লাকী বাজার এলাকায় তার নিজ বাড়িতে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠে।
এই ঘটনায় নিহতের ভাই মো. সামসুদ্দিন সৈয়াল (৪৪) বাদী হয়ে সোমবার দিবাগত রাতে ৪ জনের নাম উল্লেখ্য করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার আসামীরা হলো- কুতুবপুর কেন্দ্রিয় জামে মসজিদ সংলগ্ন মুন্সিবাড়ীর হাজী মোস্তফা মুন্সির ছেলে ও নিহতের স্বামী আলী হোসেন (৪৪),তার দুই ভাই আপেল মাহমুদ(৩৮), হাবিবি(৪৮) ও মিনু (৩২)।
হত্যা মামলার পরে নিহতের স্বামী আলী হোসনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর পরে তার দেখানো স্থান থেকে রক্ত মাখা ছুরি উদ্ধার করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রোববার রাতে নিহতের শ্বশুর বাড়ির লোকজন ওই গৃহবধূ নগরীর খানপুর হাসপাতাল নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে সোমবার রাতে নিহতের ভাই বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় স্বামী সহ চারজন কে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রধান আসামী নিহতের স্বামী কে আমরা রাতেই গ্রেফতার করি। এবং তার স্বীকারোক্তি এবং দেখানো মতে ঘরের খাটের নিচ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আজম বলেন, এই ঘটনায় নিহতের স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তার দেখানো স্থান থেকে রক্তামাখা ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।
জানা গেছে, নিহতের চারভাই প্রবাসী হওয়ার তার কাছে নানা অজুহাতে টাকা চাইতেন নিহতের স্বামী আলী হোসেন। এর আগেও জেসমিনকে টাকার জন্য মারধর করা হলে তিনি তার মেজো ভাইকে ঘটনা জানায়। এ নিয়ে রাতে তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়।
রোববার দিবাগত রাত আড়াইটা দিকে নিহতের স্বামীর ভাই আপেল মাহমুদ নিহতের পরিবারকে ফোন করে জানায় জেসমিন অসুস্থ তাই তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। পরে পরিবারে লোকজন সোমবার ভোর সকালে এসে দেখতে পায় হাসপাতালের ট্রলিতে জেসমিনের মৃত দেহ। নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
নিহতের স্বজনরা জানান, তার বোন জেসমিন ৭ মাসের গর্ভবতী থাকা অবস্থায় তার উপর টাকার জন্য নানাভাবে নির্যাতন চালাতেন স্বামী. শ্বাশুড়ি ও তাদের স্বজনরা। এরপর ৩ ধাপে ৮ লাখ, ৫ লাখ ও ৭ লাখ টাকা দিয়েও তার উপর নির্যাতনের খড়গ বন্ধ করতে পারেন নি।