চলমান হকার উচ্ছেদের প্রতিবাদ জানিয়ে তাদের পুনর্বাসনের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা হকার্স সংগ্রাম পরিষদ। শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চাষাঢ়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে এ কর্মসূচী পালন করা হয়।
এ সময় জেলা হকার্স সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি আসাদুল ইসলাম বলেন, ৩ ফেব্রুয়ারি যখন প্রেস ক্লাবের গোল টেবিল বসানো হয়েছিল, আমরা অনেক আগ্রহে অপেক্ষা করেছিলাম। আমরা ভেবেছিলাম নগরবাসীর ভাগ্য নির্ধারণ হবে। আমাদেরও বুঝি ভাগ্য নির্ধারণ হবে। পুলিশ সুপার আমাদের পুনবার্সনের কথা বললেন যে, উনাদের ব্যবস্থা করেন। আমরা লাইভ দেখেছি, তখন আমরা আশার আলো দেখছিলাম। মেয়র আইভী ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের কথায় হতাশ হলাম। যখন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বক্তব্য দিতে যাবেন আমারা ভেবেছিলাম, উনি আমাদের জন্য কিছু করবেন। কারণ উনি গরীবদের পক্ষে এতদিন কথা বলেছেন। কিন্তু উনার কথা শুনে আরও হতাশ হয়ে গেলাম।
তিনি বলেন, স্যালুট জানাই সেই পুলিশ সুপারকে যিনি হকারদের পক্ষে বলেছিলেন। কিন্তু এর জন্য তাকে মেয়র ও এমপিদের তোপের মুখে পড়তে হয়েছিল। পরে পুলিশ সুপার আমাদের রাস্তা-ঘাট খালি করতে বললেন। আমরা বললাম, রাস্তা-ঘাট তো খালি। আমরা সবসময় বসি না। আমাদের মধ্যে কেউ সন্ধ্যা, সন্ধ্যার পর কেউবা সন্ধ্যার আগে বসে। উনি বললেন, আপনার জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলেন। পরবর্তীতে আমরা জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের আমরা কয়জন গিয়েছিলাম। উনার কাছে কাকুতি-মিনতি করেছিলাম, আমাদের জন্য কিছু করেন। উনি আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, উনি আমাদের জন্য কিছু করবেন। আমরা শান্তনা পেয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, ৩ ভাই-বোন মিলে আমাদের জন্য কিছু করবেন। কিন্তু তার আর খবর নাই।
জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্য করে আসাদুল ইসলাম বলেন, আমি জনপ্রতিনিধিদের প্রতি ২৫ হাজার হকারের পক্ষ থেকে অনুরোধ করে বলতে চাই, আমাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করুন। নয়ত পুনর্বাসনের আগ পর্যন্ত একটি নির্দিষ্ট সময় বসতে দিন। আশা করি জনপ্রতিনিধিরা আমাদের পুনবার্সন করতে ডাকবেন। তারপরও যদি না ডাকেন, আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে যা লাগে তাই করবো। যে পর্যন্ত আমাদের দাবি পুরণ না হয় আমরা রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাব।
গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এড. মন্টু ঘোষ বলেন, পৌর মেয়র, দুই জন এমপি ও পুলিশ এসপি সাহেব যেসকল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা কোন মতেই খারাপ না। যারা একাসথে বসে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাদের যদি হাত জোড় করে জিজ্ঞাস করি একবারও কি এমন নোটিশ দিয়েছেন যে, কাল থেকে আর বসা যাবে না। একজন বাকি এনে বিক্রি করে পরিবারের খাবার যোগায়। তাকে অন্য জায়গায় গেলে কোথায় বসবে সে চিন্তা করতে হবে। আর তাকে হঠাৎ করে উঠিয়ে দেওয়া যৌক্তিক বলে মনে করি না। মেয়র, এমপিদের প্রতি প্রার্থণা তারা যেন আবার বসেন ও হকারদের ডাকেন।
অবস্থান কর্মসূচী শেষে জেলা হকার্স সংগ্রাম পরিষদ চাষাঢ়া থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে । মিছিলটি ২নং রেল গেটে হয়ে পুনরায় চাষাঢ়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় ও শহীদ মিনারের সামনে এসে শেষ হয়।