বিআইডব্লিউটিএ কতৃক শীতলক্ষা নদীর তীরের প্রায় ৮০টি পরিণত গাছ কাটার প্রতিবাদে স্মারকলিপি দিয়েছে ‘শীতলক্ষ্যা পাড়ের গাছ রক্ষায় নারায়ণগঞ্জবাসী’ নামে একটি পরিবেশবাদী সংগঠন। রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারী) সকাল সাড়ে ১১টায় বিআইডব্লিউটিএ’র নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের যুগ্ম-পরিচালক মো. শহীদুল্লাহ’র সাথে সাক্ষাৎ করেন পরিবেশ, সাংস্কৃতিক ও নাগরিক কমিটির নেতারা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সমন্বয়ক কবি আরিফ বুলবুল, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি ও পরিবেশ সংগঠক এবি সিদ্দিক, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি ভবানী শংকর রায়, গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার নির্বাহী সমন্বয়কারী অঞ্জন দাস, শ্রুতি সাংস্কৃতিক একাডেমীর সভাপতি মাইনুদ্দীন মানিক, সমগীত সংস্কৃতি প্রাঙ্গণের সাবেক সভাপতি শিল্পী অমল আকাশ, পরিবেশকর্মী রঞ্জিত কর্মকার, শীতলক্ষ্যা পাড়ের গাছ রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব শুভ দেব, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের জেলার সহ সভাপতি সাইদুর রহমান, পরিবেশকর্মী অভি জাহিদ সহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সম্প্রতি নানান গণমাধ্যম সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) নারায়ণগঞ্জ কার্যালয় তাদের নতুন স্থাপনা ও গাড়ি পার্কিং নির্মাণের জন্য শীতলক্ষ্যা নদীর তিন নম্বর মাছ ঘাট এলাকার শতাধিক গাছ নির্বিচারে কেটে ফেলছে। এছাড়াও তারা মাছ ঘাটের প্রাচীন বটগাছটিও কাটার উদ্যোগ নিয়েছে। এরই মধ্যে বট গাছটির প্রায় সকল শাখা ও কাণ্ডের একাংশ কেটে ফেলা হয়েছে। এতে করে ওই এলাকার পাখ-পাখালি, পোকা-মাকড়সহ গাছগুলোর উপর নির্ভরশীল অসংখ্য প্রাণ অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। পাশপাশি প্রাচীন বটগাছটিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা শহরের সাংস্কৃতিক পরিবেশেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, বিআইডব্লিউটিএ এমন একটি প্রতিষ্ঠান যাদের কাজই হলো নদী এবং নদী কেন্দ্রীক গড়ে উঠা বাস্তুতন্ত্র রক্ষা করা। বিশ্ব ব্যাংকের উদ্যোগ কিংবা বন বিভাগের অনুমতির কথা বলে তারা তাদের দায় এড়াতে পারেনা। ফলে আমাদের প্রত্যাশা থাকে যে বিআইডব্লিউটিএ প্রাণ-প্রকৃতির প্রতি দরদ ও দায় অনুভব করবে। অন্যথায় দেশের নদী রক্ষার দায়িত্বে থাকা আমাদের এই প্রতিষ্ঠানটির প্রতি জনগণের বিরুপ ধারণা তৈরি হবে। আমরা নারায়ণগঞ্জের প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমরা নারায়ণগঞ্জের প্রাণ শীতলক্ষ্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমরা পৃথিবীর প্রতিটি প্রাণের হক আদায় করতে চাই। সেক্ষেত্রে আমরা ৩নং ঘাটের গাছ রক্ষায় বদ্ধপরিকর। আমরা মনে করি প্রকল্প মানুষের সুবিধার্থে গড়ে উঠে। কিন্তু যে প্রকল্পে হাজারও প্রাণ ঝুঁকির সম্মুখীন হয়, মানুষের জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেটা কখনোই উন্নয়ন হতে পারে না। তাই অবিলম্বে শীতলক্ষ্যা পাড়ের গাছ কাটা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। যে গাছগুলো ইতিমধ্যেই কেটে ফেলা হয়েছে তার ক্ষতিপূরণ স্বরূপ আরও গাছ রোপণ করতে হবে এবং নির্ধারিত এরিয়ার ভেতর অবস্থিত গাছগুলোকে না কেটে এগুলোকে পরিকল্পনার মধ্যে রেখেই নতুন প্রকল্পের কাজ হাতে নিতে হবে। অন্যথায় নারায়ণগঞ্জবাসী এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।