‘শীতলক্ষ্যা পাড়ের গাছ রক্ষায় নারায়ণগঞ্জবাসী’র পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক মোঃ মঞ্জুরুল হাফিজ এর হাতে স্মারকলিপি তুলে দেয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারী) স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সমন্বয়কারী কবি আরিফ বুলবুল, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটি ও বাপার সভাপতি এবি সিদ্দিক, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি ভবানী শংকর রায়, সমগীত সংস্কৃতি প্রাঙ্গণের সাবেক সভাপতি শিল্পী অমল আকাশ, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন, নির্বাহী সমন্বয়কারী অঞ্জন দাস, ন্যাপ নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি এড. আওলাদ হোসেন, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জিয়াউর ইসলাম কাজল, সাবেক সভাপতি প্রদীপ ঘোষ বাবু, গাছ রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব শুভ দেব, আইনজীবী বিলকিস ঝর্ণা, প্রথম আলো বন্ধুসভার জেলা সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম মিন্টু, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের জেলার সহ সভাপতি সাইদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সৃজয় সাহা, সংস্কৃতিকর্মী অভি জাহিদ সহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুসারে শীতলক্ষ্যা নদীর নারায়ণগঞ্জ মহানগর অংশ প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা। আইন অনুসারে এই এলাকার প্রাকৃতিক গাছপালা কাটা কিংবা আহরণ এবং প্রাণী ও উদ্ভিদের আবাসস্থল ধ্বংসকারী সকল প্রকার কার্যকলাপ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অথচ সম্প্রতি বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নতুন স্থাপনা ও গাড়ি পার্কিং নির্মাণের জন্য শীতলক্ষ্যা নদীর তিন নম্বর মাছ ঘাট এলাকার প্রায় অর্ধ শতাধিক গাছ নির্বিচারে কেটে ফেলেছে। এছাড়াও তারা মাছ ঘাটের প্রাচীন বটগাছটিও কাটার উদ্যোগ নিয়েছে। এরই মধ্যে বট গাছটির গাছের প্রায় সকল শাখা ও কাণ্ডের একাংশ কেটে ফেলা হয়েছে। এতে করে ওই এলাকার পাখপাখালি, পোকামাকড়সহ গাছগুলির উপর নির্ভরশীল অসংখ্য প্রাণ অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। পাশপাশি প্রাচীন বটগাছটিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা শহরের সাংস্কৃতিক পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
জেলা প্রশাসকের যথাযথ হস্তক্ষেপ আশা করে নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা নারায়ণগঞ্জের প্রকৃতি ও পরিবেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন। নারায়ণগঞ্জের প্রাণ শীতলক্ষ্যা নদী নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা পৃথিবীর প্রতিটি প্রাণের হক আদায় করতে চাই। সেক্ষেত্রে শীতলক্ষ্যার পাড়ের গাছ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বদ্ধপরিকর। আমরা মনে করি প্রকল্প মানুষের সুবিধার্থে গড়ে উঠে। কিন্তু যে প্রকল্পে হাজারও প্রাণ ঝুঁকির সম্মুখীন হয়, মানুষের জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেটা কখনোই উন্নয়ন হতে পারে না। তাই অবিলম্বে শীতলক্ষ্যা পাড়ের গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে। যে গাছগুলো ইতিমধ্যেই কেটে ফেলা হয়েছে তার ক্ষতিপূরণ স্বরূপ আরও গাছ রোপণ করতে হবে এবং নির্ধারিত এরিয়ার ভেতর অবস্থিত গাছগুলোকে না কেটে এগুলোকে পরিকল্পনার মধ্যে রেখেই নতুন প্রকল্পের কাজ হাতে নিতে হবে। অন্যথায় নারায়ণগঞ্জবাসী এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
জেলা প্রশাসক মোঃ মঞ্জুরুল হাফিজ নেতৃবৃন্দের কথা শোনেন এবং এই বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে আশ্বস্ত করেন।