আমলাপাড়ায় একটি মসজিদের নামে ওয়াকফ করা চার শতাংশের উপর নির্মিত বাড়ি দখল করার অভিযোগ উঠেছে। হাইকোর্টের নির্দেশনা উপেক্ষা করে এক নারী ও তার সাথের লোকজন মসজিদের জন্য ওয়াকফ করা বাড়ি জোর করে দখল করে রেখেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
নগরীর ২৩/১ আমলাপাড়া হোল্ডিংয়ের বাসিন্দা তমিজ উদ্দিন ভূইয়ার ছেলে শাহজাহান ভূইয়া নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় করা জিডিতে উল্লেখ করেন, তার মা খোদেজা বেগম আমলাপাড়া এলাকায় তার মায়ের মালিকানাধীন ১৪ কে সি নাগ রোড হোল্ডিংয়ের ৪ শতাংশ জায়গার উপর নির্মিত দুইতলা ভবন ‘আমলাপাড়া বায়তুল জান্নাত জামে মসজিদে’র নামে ১৯৯৯ সালের ২১ ডিসেম্বর ওয়াকফ করেন। পরে খোদেজা বেগমের ছোট ছেলে আব্দুল লতিফ ভূইয়া এই বাড়ি তাকে দেয়া হয়েছে মর্মে একটি দলিল তার আছে দাবী করে ওয়াকফ দলিল বাতিলের জন্য মামলা করেন। এবং নিজ পক্ষে নি¤œ আদালতের রায় পায়। মামলা দায়েরের দীর্ঘ পঁচিশ বছর পর হাইকোর্ট নি¤œ আদালতের রায় বাতিল করে মসজিদের পক্ষে আদেশ প্রদান করে।
শাজাহান ভূইয়া এই ওয়াকফ মসজিদের মোতয়াল্লি। শাজাহান ভূইয়া জিডিতে আরো বলেন, আব্দুল লতিফ ভূইয়ার মৃত্যু হলে তার মেয়ে লুবাইয়ানা লতিফ লামিসা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে সিভিল মিস পিটিশন দাখিল করলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এই জায়গার উপর স্থিতাবস্থা জারি করে। কিন্তু এ স্থিতাবস্থার আদেশ উপেক্ষা করে এ বছরের গত ২৬ মে সকাল দশটায় মৃত আব্দুল লতিফ ভূইয়ার স্ত্রী জিনাত জোহরা মুক্তার নেতৃত্বে তার ভাই সাঈদ ইবনে আলম হিরা, পরশ, তার বড় বোনের ছেলে আবু রায়হান, রোহানসহ অজ্ঞাতনামা ৭-৮ জন্য সন্ত্রাসী ওয়াকফ করা এই ভবনটির তিনটি ফ্লোর দখল করে নেয়। সেই ফ্লোরগুলি এখন সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের জন্য ব্যবহার করছে। জিনাত জোহরা মুক্তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা হয়েছে।
মসজিদের জন্য জায়গা দানকারি খোদেজা খানমের বড় মেয়ে মরহুম সুফিয়া বেগমের মেঝ ছেলে মোহাম্মদ নূরে আলম রিপন বলেন, আমার নানা ১৯৬৫ সালে মারা যায়। এরপর আমার নানী পাঁচ মেয়ে তিন ছেলেকে বড় করে তোলে। এর মধ্যে মৃত আব্দুল লতিফ ভূইয়া ও তার পরিবার মসজিদ নির্মাণের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। আর বাকি সাতজন সবাই এই মসজিদ নির্মাণের পক্ষে। আমার নানী জীবিত থাকাকালীন সব সন্তানকে সুষ্ঠভাবে সম্পদ বন্টন করে দিয়ে যান। কিন্তু এর পরেও তারা এই মসজিদের জায়গা আত্মসাতের চেস্টা করছেন।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত জিনাত জোহরা মুক্তার ফোন নাম্বারে ফোন দেয়া হলে তিনি সকল অভিযোগ অস্বিকার করেন। কিন্তু এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে রাজি হননি।
তার ভাই সাঈদ ইবনে আলম হিরা হামলার অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন, ঐ বাড়িতে আগে থেকেই আমার বোনের ভাড়াটিয়া ছিলো। আমরা কোনো দখল করতে যাইনি। আদালত এ ব্যাপারে যে আদেশ দিবেন তা মেনে নেবো।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ সদর থানার এস আই আব্দুল কুদ্দুস জানান, এলাকায় উত্তেজনার প্রেক্ষিতে থানায় একটি জিডি হলে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে আমরা সেখানে যাই। জিনাত জোহরা মুক্তা তার ভবনের মালিকানার স্বপক্ষে আমাদের কোনো কাগজ দেখাতে পারেননি। অন্যদিকে অভিযোগকারি শাজাহান ভূইয়া এই জায়গাটিতে স্থিতাবস্থার পক্ষে কাগজ দেখান। এলাকাবাসিও এখানে মসজিদ হওয়ার পক্ষে। যাই হোক আমরা সব পক্ষকে আদালতের আদেশ মানতে অনুরোধ জানিয়ে ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়ে চলে আসি।