সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ নিটিং ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেওএ)। রোববার (১৪ জুলাই) বিকেওএর সভাপতি সেলিম সারোয়ার গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ১৫ জুলাই সকাল ৮টা থেকে দেশের সব নিটিং ও কলার কারখানার সবধরনের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। সারাদেশে প্রায় ১২০০ নিটিং কারখানা রয়েছে। যার মধ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলাতেই ৮ শতাধিক কারখানা।
সেলিম সারোয়ার বলেন, গত চার বছরে ডলারের রেট ৪০ শতাংশ বেড়ে ৮৪ টাকা থেকে ১১৮ টাকায় দাঁড়িয়েছে। নিটিং কারখানার কাঁচামালগুলো ডলারের মাধ্যমে আমদানি করা হয়। ডলারের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সমন্বয় করে নিটিং পণ্যের মজুরি নির্ধারণের দাবি আমাদের।
বিকেওএর সভাপতি বলেন, ডলারের রেট ৪০ শতাংশ বাড়লেও আমরা সিঙ্গেল জার্সিতে কেবল ১৫ টাকা ৫ টাকা বাড়িয়ে ২০ টাকা নির্ধারণ করেছি। এ দাবি আমাদের যৌক্তিক দাবি। আমরা আর লোকসানে কারখানা চালাতে পারছি না। গার্মেন্টস মালিকরা যদি মজুরি না বাড়ান তাহলে আমাদের কারখানাগুলো চালানোর কোনো সুযোগ নেই।
এর আগে শনিবার নারায়ণগঞ্জের বিসিকে সংগঠনটির এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ওই সভায় সেলিম সারোয়ার বলেন, নিটিং ফ্যাক্টরি একটি রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্পের অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ প্রতিষ্ঠান। নিট শিল্পে নিটিং ফ্যাক্টরিগুলোকে অবজ্ঞা বা হালকা করে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু অতি দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে আমাদের এ নিটিং ফ্যাক্টরিগুলোর মালিকরা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি মালিকদের অবহেলা ও অসহযোগিতার কারণে আজ মানবেতর জীবনযাপন করছে। অথচ নিট শিল্পের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে নিটিং ফ্যাক্টরিগুলোর অবদান অপরিসীম। কিন্তু আমরা ন্যায্য মজুরি পাচ্ছি না।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ডলারের মূল্য বৃদ্ধির কারণে আমদানি নির্ভর কাঁচামালের দাম, নিটিং মেশিনের এক্সোসরিজ, ফ্লোর ভাড়া, পরিবহন খরচ, দফায় দফায় বিদ্যুতের দাম, শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধিতে নিটিং কারখানা মালিকদের টিকে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বর্তমানে নিটিং ফ্যাক্টরির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য ১ জুলাই তারিখে ঘোষিত নতুন নিটিং মজুরি বাস্তবায়ন ছাড়া আমাদের আর কোনো বিকল্প ব্যবস্থা নেই। এ অবস্থায় বাধ্য হয়ে সব নিটিং শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।