জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রনালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ফরিদা ইয়াসমিন এমপি বলেছেন, কোটা আন্দোলনের নামে যারা সহিংসতায় লিপ্ত হয়েছিলো তাদের অন্যতম টার্গেট ছিলো সাংবাদিক। রাজধানী ঢাকাসহ প্রতিটি জেলায় সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছে সাংবাদিকরা। এতে ৪ জন সাংবাদিক নিহতসহ হতাহতের সংখ্যা অনেক।
সোমবার (২৯ জুলাই) বিকেলে নারায়ণগঞ্জে কোটা আন্দোলনের সময় সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে আহত সাংবাদিকদের দেখতে এসে তিনি এসব কথা বলেন।
ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় ৩ জন নারী সাংবাদিককে মারধর ও যৌন হেনস্তা করা হয়েছে। এছাড়া আরও প্রায় ৭/৮ জন সাংবাদিক আহত হয়েছে। আমি তাদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। পেশাগত দায়িত্ব পলনকালে সাংবাদিকরা তাদের (নাশকতাকারী) টার্গেট ছিলো। আইন-শৃংখলা বাহিনীর পাশাপাশি সাংবাদিকদের উপর নক্কারজনক হামলা করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জে সোনালী আক্তার নামে নারী সাংবাদিককে পিটিয়ে তার পড়নের কাপড় খুলে অর্ধনগ্ন করা হয়েছে। আমি এই নক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। যারা এই ঘটনার সাথে জড়িত তাদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করছি।
তিনি আরও বলেন, সরকার ১৮ সালেই কোটা আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নিয়েছিলো। এই প্রজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে দুজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে রীট করে সেই প্রজ্ঞাপন স্থগিত করে। আমাদের মাননীয় প্রধাণ মন্ত্রী শিক্ষার্থীদের কয়েকটাদিন ধৈর্য ধরতে বলেছিলেন। তারা তৃতীয় পক্ষের উসকানীতে সেটাকে উপেক্ষা করে আন্দোলনে নেমেছে। শেষ পর্যন্ত তাদের আন্দোলন বিএনপি-জামায়াতের নাশকতায় রূপ নেয়। তাদের হাত থেকে আন্দোলন নাশকতাকারীদের হাতে চলে গেছে। যারফলে দেশের বিরাট ক্ষতি হয়ে গেলো। এতোগুলো প্রাণ চলে গেলো। বিশাল ক্ষয়ক্ষতি হলো। বিটিভির মতো জাতীয় সম্প্রচার কেন্দ্র ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত করা হলো। মেট্রোরেল, সেতু বিভাগ, বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে নারকীয় তান্ডব চালানো হলো। এসব ক্ষতি কি পূরণ হবে। যে মায়ের বুক খালি হয়েছে তাদের কে শান্তনা দিবে। সপ্নের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো গুড়িয়ে নস্যাৎ করা হলো। যারা এসব নাশকতার সাথে জড়িত তাদের খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তির ব্যাবস্থা করতে হবে।
এরআগে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে গিয়ে গুলিবিদ্ধসহ আহত সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন তিনি। আহতদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাগো নিউজের জেলা প্রতিনিধি মোবাশ্বের শ্রাবন। তার মাথায় ৬টি গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এছাড়া আহত ফটো সাংবাদিক সবুজ ও মানবজমিনের ফতুল্লা প্রতিনিধি।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আরিফ আলম দীপু, সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান বাদল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সাউদ মাসুদ, জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুস সালাম, ফটো জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি শফিউদ্দিন বিটু প্রমুখ।