নারায়ণগঞ্জ-৫ (শহর-বন্দর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ঐতিহ্যবাহী ওসমান পরিবারের বড়ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ৭৫’র প্রতিরোধ যোদ্ধা একেএম নাসিম ওসমানের ১০ম মৃত্যু বার্ষিকী মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) । ২০১৪ সালের এই দিনে ভারতের দিল্লীর একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
প্রভাবশালী সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সেলিম ওসমানের বড় ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিম ওসমান নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে চারবার (১৯৮৮৪, ১৯৮৬, ২০০৮ ও ২০১৪) জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সালের ১৪ আগষ্ট ছিলো তার বিয়ের দিন। ওইদিন তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জোষ্ঠ্যপুত্র শেখ কামাল বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। পরদিন ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে যাবেন তাই রাতে নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় গিয়ে পরদিন ১৫ আগষ্ট স্বপরিবারে নিহত হন। সেদিন শেখ কামাল নারায়ণগঞ্জে থেকে গেলে রাজনীতির ইতিহাস অন্যভাবে লেখা হতো। বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার সংবাদ পেয়ে ওইদিনই নববধুকে রেখে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিতে বাড়ী থেকে বের হয়ে যান নাসিম ওসমান। যোগ দেন কাদেরীয়া বাহিনীতে।
১৯৮৪ সালে জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়ে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন নাসিম ওসমান। এরপর আরও তিনবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি জাতীয় পার্টির অন্যতম নীতিনির্ধারক ও প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। তারপরও বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার প্রশ্নে আমৃত্যু অবিচল ছিলেন। প্রয়াত এমপি নাসিম ওসমানের ছোটভাই এমপি সেলিম ওসমান এবং সহধর্মীনী পারভীন ওসমান বর্তমানে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য।
নাসিম ওসমানের মৃত্যুর পর জাতীয় সংসদে বক্তব্য দেয়ার সময় কেঁদেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছিলেন, রাজনীতি করতে গিয়ে ওসমান পরিবারকে বহু ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করতে হয়েছে। এই পরিবারের দায়িত্ব আমি নিলাম।
শীতলক্ষা তৃতীয় সেতু নির্মাণে বিশেষ অবদানের কারনে এই সেতুর নামকরণ ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসিম ওসমান সেতু’ করা হয়েছে। প্রয়াত এই নেতার ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে পরিবার ও নেতা-কর্মীদের পক্ষ থেকে মিলাদ দোয়া কবর জিয়ারতসহ নানা কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে।